মো. আফছানুল আদনান (আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান) নামের এক যুবক গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে গাড়িচালকসহ অপর দুই সঙ্গীর হদিসও মিলছে না। নিখোঁজ আদনান অনলাইনে ধর্মীয় বক্তা হিসেবে পরিচিত। আফজানুল আদনানের খোঁজ না পেয়ে তাঁর পরিবার উদ্বিগ্ন। সন্ধান পেতে আদনানের মা রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
আদনান (৩১) সপরিবার রংপুর শহরে থাকেন। আজ দুপুরে তাঁর মা আজেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে অনলাইনে আরবি পড়ানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুতবা দিতে যেতেন। আদনান শুক্রবার ঢাকার একটি মসজিদে খুতবা দেওয়ার উদ্দেশে রংপুর থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকায় রওনা দেন। আদনানের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই সঙ্গী আবদুল মুহিত ও ফিরোজ। এ ছাড়া গাড়িচালক হিসেবে ছিলেন আমির উদ্দিন ফয়েজ।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৩৬ মিনিটে আদনানকে তাঁর স্ত্রী ফোন দিলে তিনি বলেন, তিনি এখন ঢাকার গাবতলীতে আছেন। মুঠোফোনের চার্জও প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এরপর থেকে আদনানসহ সবার মুঠোফোনই বন্ধ রয়েছে।
আজেদা বেগম বলেন, আদনান কোনো রাজনীতি বা কোনো ধর্মীয় সংগঠনও করেন না। আদনানের খোঁজ না পেয়ে পরিবার উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। ছেলেকে ফিরে পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপ চান আজেদা।
আদনানসহ চারজনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আদনানকে ইউটিউবে বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন, এমন দেখা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে আজ সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। আদনান ও তাঁর সঙ্গীদের উদ্ধারে তারা কাজ করবেন বলে জানান। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি নলেজে নেই।’
গত শুক্রবার আদনানের মা রংপুর মহানগরের কোতোয়ালি থানায় তাঁর ছেলের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে জিডি করেন। এতে বলা হয়, ঢাকার সম্ভাব্য সব স্থান, আত্মীয়স্বজন ও আদনানের বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশ্য ওই জিডিতে আদনানের নিখোঁজ থাকার কথা বলা হলেও গাড়িচালক ও দুই সঙ্গীর বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে আজ রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার প্রথম আলোকে বলেন, আদনান নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় জিডি হয়েছে। সীমান্তের থানাসহ জিডির বিষয়ে সব থানাকে অবগত করা হয়েছে। জিডির বিষয়ে তদন্ত চলছে।