ঢাকাশুক্রবার , ১৭ নভেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ খবর

ঘুর্ণিঝড় মিথিলি সম্পর্কে যা জানা গেলো


নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১২:২০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় মিধিলি হিসাবে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা শুক্রবার দুপুর থেকে মধ্য রাতের মধ্যে (আপডেট ১০, বৃহঃপতিবার দিবাগত রাত ১২ টা, ২০২৩) বলে জানিয়েছেস আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আজ বৃহঃপতিবার সকালে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬ টার পর থেকে সন্ধা ৬ টার মধ্যে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা শতকরা ৯০% এর বেশি। স্থল ভাগে আঘাতের সম্ভব্য স্থান খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার জেলাগুলোর উপর দিয়ে।

আশংকা করা যাচ্ছে যে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের ২৪ তারিখে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং যে জেলাগুলোর উপর দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করেছিল প্রায় একই জেলাগুলোর উপরে দিয়ে স্থল ভাগ অতিক্রম করার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি (ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে পরিণত হওয়ার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে)।
আজ বৃহঃপতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১ টা বেজে ৪৫ মিনিটে জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে সৃষ্টি হওয়া বহিঃস্থ বৃষ্টিবলয় (Outer Rainbands) আজ বৃহঃপতিবার বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোর উপরে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তা আগামী শানিবার ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমেরিকান নৌ বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার হতে জারি করা সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে গভীর নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সামান্য সম্ভাবনার কথা নির্দেশ করতেছে। গভীর নিম্নচাপটি স্থল ভাগে আঘাত করার কিছু পূর্বে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তবে নাম হবে “মিধিলি”। এই নামটি ইরানের দেওয়া। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত না হলেও গভীর নিম্নচাপ হিসাবে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকার উপরে দিয়ে স্থল ভাগ অতিক্রম করার আশংকা করা যাচ্ছে শুক্রবার ভোর ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।

গাভীর নিম্নচাপটি প্রভাবে বাংলাদেশের উপর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে শনিবার দুপুর পর্যন্ত। গভীর নিম্নচাপের কারণে সর্বোচ্চ পরিমাণের বৃষ্টিপাতের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাসমূহ নিম্নরূপ:
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগন্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাক্ষমবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি, ও চট্টগ্রাম জেলা।

বাংলাদেশের উপকূলে আঘাতের সম্ভাব্য সময়: ১৭ ই নভেম্বর সকাল ৬ টার পর থেকে রাত ১২ টার মধ্যে।
বাতাসের সম্ভব্য গড় গতিবেগ: ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার
বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ (দমকা হাওয়া): ঘন্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার
জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা: স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি
বৃষ্টিপাতের সম্ভব্য পরিমাণ (১৬ ই নভেম্বর মধ্য রাতের পর থেকে ১৮ ই নভেম্বর দুপুর ১২ টা পর্যন্ত):
১) বরিশাল বিভাগের জেলাগুলো: ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার
২) খুলনা বিভাগের জেলাগুলো: ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
৩) ঢাকা বিভাগের জেলাগুলো: বিভাগ ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
৪) চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলো: ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার
৫) সিলেট বিভাগের জেলাগুলো ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার
৬) রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো: ৫০ থেকে ৭৫ মিলিমিটার
৭) ময়মনিসংহ বিভাগের জেলাগুলো: ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার
৮) রংপুর বিভাগের জেলাগুলো: ২৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার।

তথ্যসুত্র:
মোস্তফা কামাল পলাশ
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক
সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার মতামত বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।