ঢাকাশুক্রবার , ২৬ আগস্ট ২০২২
আজকের সর্বশেষ খবর

স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের শিরিনরা নতুন জীবন শুরু করেছেনব


আগস্ট ২৬, ২০২২ ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বেড়া উপজেলার মাসুন্দিয়া ইউনিয়নের ফকিরকান্দি গ্রামের অন্যর জমিতে বাস করতেন ভ্যানচালক রিপন খাঁ (৪০)। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দুই শতক জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে এখন আশ্রয়ন প্রকল্পের বসবাস করছেন তিনি । তবে এখন আর ভ্যান চালাতে পারেন না সে । দুই বছর আগে

স্টোক করে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন রিপন । স্ত্রী শিরিন খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করে তার সংসার চালাতেন।এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া জমিসহ ঘর পেয়ে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা পেয়েছেন রিপন। বৃদ্ধ পিতা স্ত্রী সন্তানসহ ঠাঁই পেয়েছেন “ফকিরকান্দি”- আশ্রয়ণ প্রকল্পে। একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে স্ত্রী শিরিন খাতুন ঘরের বারান্দায় দিয়েছেন “চায়ের” দোকান। সাথে দোকানে চাল ডাল,সাবান,শিশুখাদ্যসহ নিত্যপন্য বিক্রি শুরু করছেন তিনি । ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই নেয়া ৮৪ টি পরিবারের বৃদ্ধ থেকে শিশু পর্যন্ত মানুষগুলো তার দোকান থেকে প্রতিদিনই কিছু না কিছু কিনছেন । দিন যাচ্ছে আর স্বপ্ন বড়ো হচ্ছে শিরিনের।
অন্যদিকে উপজেলার জাতসাখিনী ইউনিয়নের ‘বিশ্বনাথপুর আশ্রয়ণ” প্রকল্পে ঠাঁই মেলেছে আলতাফ হোসেন নামের এক অসহায় ব্যক্তির।সে যমুনা নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সহায়সম্পদ হারিয়ে ছেলে মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। সেখানে দুই মুঠো ভাতের যোগান দিতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। একটি মাথাগোঁজার জায়গা না থাকার যন্ত্রণা সবসময় তাকে তারিয়ে বেড়াতো। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বরাদ্দ হচ্ছে যেনে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ শুরু করলেন। এভাবে একটি ঘর পেয়ে যাবেন এটা তার কাছে স্বপ্নের মতোই মনে হয়েছে। স্ত্রী আন্জুয়ারা খাতুন বাড়ির আঙ্গিনায় হাঁস মুরগি ও ছাগল পালনের মধ্যেমে আলতাফ আন্জু দম্পতিও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ তৈরি করেছেন।
এভাবে নিজের ঠাঁই পেয়ে প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় শাঁক সব্জি চাষ করে আশ্রয়ণ প্রকল্পটি সবুজ বেষ্টনীতে ঘিরে ফেলেছেন আশ্রিত পরিবার। সবার একই কথা উদ্বাস্তু জীবনের যন্ত্রণা থেকে প্রধানমন্ত্রী তাদের জীবনের স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
বেড়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ সবুর আলী “আজকের পত্রিকাকে”বলেন প্রধানমন্ত্রীর যখন ঘোষনা দিলেন খাস জমি উদ্ধার করে গৃহহীন মানুষদের মধ্যে ঘরে বানিয়ে বিতরণ করা হবে। তখন থেকেই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে ঘরে নির্মানের টাকা রাস্ট্র যত সহজে যোগান দিতে পেরেছিল জমি উদ্বার তত সহজ ছিল না।অতীতের নানা অ-ব্যস্থাপনায় অনেক খাস জমি প্রভাবশালীরা নিজ নামে রেকর্ড করে নিয়েছিলেন। সে সমস্ত জমি আদালতের মাধ্যমে অবমুক্ত করা অনেক জটিল বিষয় ছিল।জমি উদ্ধারে বেড়া উপজেলার সাবেক ভূমি কর্মকর্তা(এসিল্যান্ড) মাহবুবুর রহমান ও বর্তমান কর্মকর্তা রিজু তামান্না অনেক নিস্ঠা ও সাহস নিয়ে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য বেড়া উপজেলায় ২৪২ জন ভূমি ও গৃহহীন পরিবার “মুজিব বর্ষের” দেয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বপ্নের বাড়ি পেয়েছেন। ৯টি ইউনিয়নের প্রকৃত ভূমিহীন সনাক্ত করে উদ্ধারকরা ৩০ একর জায়গায় নির্মান করা হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। কিচেন, বাথরুম, বরান্দাসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি পরিবারের আয়ের ডাটাবেজ সংরক্ষণ করা হয়েছে। বেড়া উপজেলাকে গৃহহীন মুক্ত করতে আরো ১ হাজার ১৮৫ পরিবারের জন্য গৃহ নির্মান করে বরাদ্দের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার পুরণের কাজ চলমান রয়েছে।খাস জমিতে স্থান সংকলন না হলে প্রয়োজনে জমি কিনে এ প্রকল্পের পূর্ণতা আনতে উপজেলা প্রশাসন সচেষ্ট থাকবে বলে নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সবুর আলী জানান।##

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার মতামত বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।