ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৪ অক্টোবর ২০২১

পাবনায় ফখরুলের আগমনকে কেন্দ্র করে, গ্রুপিং কোন্দলে নাজেহাল বিএনপি


অক্টোবর ১৪, ২০২১ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি। সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠন নিয়েও রয়েছে যেমন অসন্তোষ, তেমনি গ্রুপিং কোন্দলের কারণে কোন কোন স্থানে আবার চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

তেমনি পাবনা জেলাঃ ক্ষমতার বাইরে থেকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় হামলা,মামলার স্বীকার হয়ে মুখ থুবড়ে পড়া নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে ০৭ জুলাই ২০১৯ ইং সালে ৪৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে আহ্বায়ক করা হয়। নতুন এ কমিটিতে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মান্নান মাস্টারকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিককে সদস্য সচিব করা হয় ।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরে প্রকাশিত হয় অত্র আহবায়ক কমিটি । কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস,বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান তোতা, সাবেক এমপি একেএম সেলিম রেজা হাবিব, সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম সরদার, সাবেক এমপি কেএম আনোয়ারুল ইসলাম, কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, মোখলেসুর রহমান বাবলু (শেখ হাসিনার ট্রেন সফরে গুলি বর্ষণ মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত), জহুরুল ইসলাম বাবু,   ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সামাদ খান মন্টু, ফজলুর রহমান ফকির, তৌফিক হাবিব, কেএম মুসা, আবু ওবায়দা সেখ তুহিন, খন্দকার মাকসুদুর রহমান (মাসুদ খন্দকার), সাইফুর রহমান, পূর্ণিমা ইসলাম, সাবির হাসান বাচ্চু, নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা, সাইফুল ইসলাম বাদশা, সেলিম আহমেদ, আনিসুল হক বাবু, আবুল হাসেম, রেহানুল ইসলাম বুলাল, আবদুল হালিম সাজ্জাদ, শহিদুর রহমান টুটুল বিশ্বাস, জাকারিয়া পিন্টু, আলহাজ এবিএম তৌফিক হাসান, মাহমুদন্নবী স্বপন, মোফাজ্জ্বল হোসেন মোশাই, জহুরুল ইসলাম, ফরহাদ জোয়ার্দার, আক্তারুজ্জামান, তপন কুমার সাহা, ডা. আহমেদ মোস্তফা নোমান, মলয় কুমার দাস রায়, মেহেরুন্নেসা, ইউসুফ আলী মোল্লা, আবদুল মান্নান খান চুকু, সাজ্জাদ হোসেন স্বপন ও শফিউল আলম শফি । বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে আহ্বায়ক এবং আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মান্নান মাস্টারকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিককে সদস্য সচিব করা এই কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন  বর্তমান কমিটির অনেক নেতৃবৃন্দ ।

তাদের অভিযোগ, দীর্ঘ ২ বছর পেড়িয়ে গেলেও পাবনা জেলার অধিনস্থ ৯ টি উপজেলা ও ৯ টি পৌর কমিটির কাজে অগ্রগতি শূন্য, এমনকি তারা কোনো ইউনিটের কমিটি সক্ষম হয়নি, উপরন্তু জেলায় অনৈক্য ও গ্রুপিং কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে তাদের জন্যই । যা নিয়ে পাবনা জেলার বিএনপির রাজনীতিতে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে । এরই মাঝে আগামী ১৭ ই অক্টোবর ২০২১ইং সদ্য ঘোষিত কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে পাবনা জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করলে সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের । কিন্তু তার আগেই গ্রুপিং কোন্দলের আভাস ভেসে আসছে নেতাকর্মীদের মাঝ থেকে ।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব ভোরের খবরকে জানান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে আছেন এজন্য প্রোগ্রাম স্থগিত করা হয়েছে । পরবর্তীতে দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারিখ নির্ধারণ করা হবে । মূলত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সভাপতি হিসাবে হাসান জাফির তুহিনকে মনোনীত করায় সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল । যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের । দীর্ঘ ২ বছরের পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও কোনো ইউনিট কমিটি না করতে পারা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর করোনা ভাইরাসের কারণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমাদের কমিটির করার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আবার নির্দেশ পেলে কমিটির কাজে হাত দেব ।  দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে আছেন এজন্য প্রোগ্রাম স্থগিত করা হয়েছে । পরবর্তীতে দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারিখ নির্ধারণ করা হবে ।

 

বিষয়টি সম্পর্কে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে সম্ভব হয়নি ।

পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সরদার গ্রুপিং কোন্দল প্রসঙ্গে জানান, গ্রুপিং কোন্দল অবশ্যই আছে। তা না হলে পাবনা জেলা বিএনপি এখন আগের মতো কেন নাই? ১৯৯১ সালে আমি কাউন্সিলের মাধ্যমে পাবনা জেলা বিএনপির সভাপতি হয়েছিলাম। তখন কোন গ্রুপিং কোন্দল ছিল না। বরং পুরো জেলার নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত ছিল। ১৭ ই অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পাবনা আগমনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা এই প্রোগ্রামটা করতে চায়, তারা আমাদের সাথে কোন আলোচনাই করেনি। চলমান পাবনা জেলা বিএনপির কোন্দল নিরসনে কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে প্রশ্নে তিনি জানান, কাউন্সিলের মাধ্যমেই ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে কমিটি ব্যতীত পাবনা জেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ ভাবে জেগে ওঠা সম্ভব নয় ।

 

সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান তোতা বলেন, বর্তমানে পাবনা জেলা বিএনপির মাঝে কোন্দল অসন্তোষ দেখা দেওয়ার পেছনে চলমান আহ্বায়ক কমিটিকেই আমি দায়ী করি। আসলে আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান বেশি সময়। ঢাকাতে অবস্থান তার সবসময়। জেলার নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে মাঠের নেতা লাগবে। আমি মনে করি হেড কোয়ার্টারের বাইরে সভাপতি, সেক্রেটারি দিয়ে কমিটি করলে পাবনা জেলা বিএনপি আন্দোলন মুখী হবে ।

 

 

এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পাবনা সফর সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন পাবনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম রেজা হাবিব ।

 

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা বলেন, পাবনা জেলা বিএনপির মধ্যে কোন কোন্দল, গ্রুপিং নাই । সুন্দরভাবে বর্তমানে পাবনা জেলা বিএনপির কমিটি পরিচালিত হচ্ছে । তবে একটু মত পার্থক্য থাকলেও কোন গ্রুপিং নাই।

 

উল্লেখ্য, কমিটি গঠন নিয়ে বিভক্ত পাবনা জেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পাল্টাপাল্টি মিছিল-সমাবেশ করছে । এক পক্ষ রাতে মিছিল করলে অন্য পক্ষ সকালে মিছিল করছে । দলের বর্তমান দুঃসময়ে কোনো কর্মসূচিতে দুই অংশ এক হতে পারছে না । ফলে একদিকে গ্রেপ্তার-আতঙ্ক, অন্যদিকে দলীয় বিভক্তিতে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।