ঢাকাসোমবার , ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ খবর

নির্বাচনের আগে শান্তি বিঘ্নিত করলে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা


ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫ ৬:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:   আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিনষ্টের যেকোনো অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ লক্ষ্যে সরকার সব ধরনের প্রশাসনিক, আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। সাক্ষাতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ছাড়াও দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বেসামরিক বিমান চলাচল, শ্রম সংস্কার এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সফল করতে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর সমন্বিতভাবে কাজ করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে জন্য সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে।

সাক্ষাতে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন গত এক বছরের দায়িত্বকালীন সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী এবং এই নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চলমান উদ্যোগগুলোকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বিশেষভাবে নতুন শ্রম আইনকে ‘অসাধারণ ও ব্যতিক্রমধর্মী’ বলে উল্লেখ করেন। তার মতে, শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এই আইন ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক হবে।

তিনি আরও বলেন, আগের সরকারগুলোর সময়ে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪৬টি মামলার মধ্যে ৪৫টি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত শ্রম অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এ ধরনের উদ্যোগ শ্রমিকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং শিল্পখাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জবাবে প্রধান উপদেষ্টা নতুন শ্রম অধ্যাদেশকে ‘একটি উৎকৃষ্ট আইন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় শ্রমিক নেতারা এই সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বিভিন্ন কনভেনশন অনুসমর্থনের বিষয়টিও আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

সাক্ষাতে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার অর্থায়ন নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আশ্রয় শিবিরে বসবাসরত এক মিলিয়নেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার জন্য জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে সবচেয়ে বড় দাতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

বিদায়ী সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বছরের দায়িত্বকালে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ‘গুরুত্বপূর্ণ কাজ’ করার জন্য ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি তাকে বাংলাদেশের একজন ‘বন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ভবিষ্যতে আবারও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।