ঢাকারবিবার , ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন হতে দেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল


ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫ ৩:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:   বাংলাদেশে কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন প্রণয়ন করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে এক গভীর ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে এবং পরিকল্পিতভাবে আন্দোলন, গুজব ও নানা ইস্যু সামনে এনে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চলছে। এসব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মানবকল্যাণ ট্রেনিং সেন্টারে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় স্থানীয় আলেম-ওলামা, বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,
“এই দেশে কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন করতে দেওয়া হবে না। আমরা চাই না দেশ আবার কোনো অন্ধকার যুগে ফিরে যাক। আমাদের লক্ষ্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।”

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, বিভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি হলে সুযোগ নেবে ষড়যন্ত্রকারীরা। এতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। তাই সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন,
“একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যে বিএনপি কোরআন ও সুন্নাহর আইন চায় না। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার। আমরা কোরআন ও সুন্নাহর মধ্যেই থাকতে চাই। আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই—আমি একজন মুসলমান।”

তিনি বলেন, ইসলাম শান্তি, সহনশীলতা ও মানবতার ধর্ম। বিএনপি বিশ্বাস করে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেই দেশে প্রকৃত শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই দলের প্রধান লক্ষ্য।

মির্জা ফখরুল জানান, বিএনপি ক্ষমতায় এলে আলেম সমাজের মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। খতিব, ইমাম ও মাওলানাদের জন্য মাসিক সম্মানী চালু করা হবে, ধর্মীয় উৎসবগুলোতে বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে, তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ের প্রধানদের জন্যও মাসিক সম্মানীর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হয়।

তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ইসলামের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক অবদান রেখে গেছেন। পবিত্র মক্কা শরিফের আরাফাতে রোপণ করা ‘জিয়া গাছ’ তার ইসলামের প্রতি ভালোবাসা ও অবদানের একটি স্মারক নিদর্শন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন,
“এই দেশের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। দেশের ধর্ম, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিএনপিই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে—এটি ইতিহাসই প্রমাণ করে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৭ বছরে দেশের মানুষ জঙ্গিবাদের আতঙ্ক থেকে মুক্ত থাকলেও রাজনৈতিক নিপীড়ন, মামলা-হামলা ও দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে এবং সেই আন্দোলনে প্রায় দুই হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় কারাবন্দি রেখে দীর্ঘদিন যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। এর ফলে তার শারীরিক অবস্থা মারাত্মকভাবে অবনতির দিকে গেছে এবং তিনি বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ।

বক্তব্যের শেষাংশে তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।