নিজস্ব প্রতিবেদক: শারীরিক ও মানসিক হেনস্তা থেকে নিজের সুরক্ষা চেয়ে মেয়ে মেহরীন আহমেদের করা মামলায় তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা নাসির আহমেদ আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে তাদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৪ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসফাকুর রহমান গালিব এ তথ্য জানান।
আদালতে শুনানি চলাকালে বাদী মেহরীন মা-বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তাদের (মা-বাবা) মাধ্যমে আমি পৃথিবীতে এসেছি, এটা আমার দোষ না। আমি তাদের পুতুল নই। আমাকে কেন গালি দেবে। আমাকে শারীরিক-মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। আমি খেতে পারি না, ঘুমাতে পারি না। আমাকে তারা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। আমাকে দুই বছর হাসপাতালে রাখা হয়। সেখানে আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছে। আমাকে কেন ওই হাসপাতালে রাখা হলো জানতে চাই। আমি চেয়েছিলাম একটা সুন্দর জীবন। কিন্তু আমি তা পাচ্ছি না। আমি আমার সুরক্ষা চাই। আমি জাস্টিস চাই।
তার বক্তব্যের সময় মেহরীনের মা জান্নাতুল ফেরদৌস কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে শুনতে থাকেন। অন্যদিকে বাবা নাসির আহমেদ অপলক দৃষ্টিত মেয়ের বক্তব্য শুনতে থাকেন। এর আগে গত ২২ জুন বাবা নাসির আহমেদ ও মা জান্নাতুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে নিজের সুরক্ষা চেয়ে একই আদালতে মামলাটি করেন রাজধানীর একটি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী মেহরীন। ওই দিন আদালত উভয় পক্ষের শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৫ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসায় বাদী মেহরীন আহমেদকে তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা নাসির আহমেদ শারীরিকভাবে আঘাত করতে থাকেন এবং গালাগাল করতে থাকেন এবং নিলাফুলা জখম করে। বাদী একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি হওয়ার পরেও তারা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, অপমান ও নির্যাতন করে যাচ্ছেন। তারা প্রতিনিয়ত পরিবারের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্যবহারে বাধা প্রদান করেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে যেসব সম্পদ বা সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের অধিকার রয়েছে, তা থেকে তাকে বঞ্চিত করে এবং বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান করে। তারা মৌখিক নির্যাতন, অপমান, অবজ্ঞা, ভীতি প্রদর্শন, গালাগাল করে তাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা শারীরিকভাবে তাকে আঘাত করে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। যার মাধ্যমে সহিংসতা ঘটেছে।