স্বপন রবি দাশ (হবিগঞ্জ) জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন সিএনজি চালকরা। ফলে বন্ধ রয়েছে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের সিএনজি চলাচল। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শ্রমিকদের দাবী সম্পূন্নরূপে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন ম্যানেজার দুলাল মিয়া।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কে সিএনজি চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সিএনজি শ্রমিকরা।
থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন পৌর এলাকার নোয়াপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের সিএনজি চালক-শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের জন্য ম্যানেজারের কাছে প্রতিদিন ১০ টাকা করে দিয়ে আসছিলেন সিএনজি চালকরা। পরে কয়েক দফায় ম্যানেজারের সঙ্গে সিএনজি চালকদের বাক-বিতণ্ডার পর বিগত প্রায় ৫ বছর ধরে সিএনজি চালক-শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে প্রতিদিন ৩০ টাকা করে দিয়ে আসছেন সিএনজি চালকরা। সম্প্রতি সিএনজি চালক-শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের টাকার হিসাব চাইলে ম্যানেজারের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়ায় সিএনজি চালকরা। হিসাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সিএনজি শ্রমিকদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেন দুলাল মিয়া। অভিযোগ ওঠে- ম্যানেজার দুলাল মিয়া সিএনজি চালক-শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে টাকা আত্মসাত করেছেন। পরে এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় সিএনজি চালকদের পক্ষে ইছমত মিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার সকালে সিএনজি চালকরা গাড়ি নিয়ে স্ট্যান্ডে গেলে ৩০ টাকা দেয়ার দাবী করেন ম্যানেজার দুলাল মিয়া। এসময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় সিএনজি চালকরা। এসময় ম্যানেজার ও চালকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর সকাল ১০টা থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেন শ্রমিকরা। ফলে বন্ধ রয়েছে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কে সিএনজি চলাচল।
সিএনজি চালক ইছমত মিয়া বলেন- ম্যানেজার দুলাল মিয়া সিএনজি চালক-শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের বিগত ৫ বছরের টাকা আত্মসাত করেছেন, হিসাব চাইতে গেলে দুলাল মিয়া বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেন, এরফলে বাধ্য হয়ে আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। আমরা চাই আমরা পূর্বে যেভাবে ১০ টাকা দিতাম, সেইভাবেই ১০ টাকা দিতে চাই এর অতিরিক্ত ১ টাকাও দিবোনা। যদি আমাদের দাবী মেনে নেওয়া হয় তাহলেই আবার এই সড়কে যান চলাচল শুরু হবে।
সিএনজি চালক পলাশ মিয়া বলেন- প্রথমে আমরা ১০ টাকা করে দিতাম, পরে ২০ টাকা এরপর থেকে ৩০ টাকা করে দিয়ে আসছি, কিন্তু এতদিন যাওয়ার পর আমাদের টাকার কোনো হিসাব-নিকাশ নেই, গাড়ির সিরিয়াল লেখা নিয়েও নানা অনিয়ম করে আসছেন ম্যানেজার, কিছু বললেই বা প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধামকি দেন, বাধ্য হয়ে আমরা সিএনজি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ-রুদ্রগ্রাম সড়কের সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার দুলাল মিয়া বলেন- এই স্ট্যান্ডে মোট ৮ জন ম্যানেজার রয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলার স্বার্থে চেকার রয়েছে, সিএনজি চালকরা অন্যান্য স্ট্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী এই স্ট্যান্ডেও ম্যানেজার ও চেকারদের পারিশ্রমিক হিসেবে প্রতিদিন ৩০ টাকা করে দিয়ে আসছেন। এরবাহিরে সিএনজি চালক-শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের নামে কোনো ধরণের টাকা কোনো সময় উত্তোলন করা হয়নি ফলে টাকা আত্মসাতের কোনো প্রশ্নই আসেনা। যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূন্নরূপে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন- সিএনজি চালকদের বলেছি নতুন করে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।