মহামারি করোনাভাইরাসে নাজেহাল গোটা বিশ্ব। বিশ্বের প্রায় ১৩ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে এই ভাইরাসে। প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৭০ হাজার। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না পশুরাও।
চিকিৎহীন এই ভাইরাসে রোববার আক্রান্ত হয়েছে নিউইয়র্কের ব্রোনক্স চিড়িয়াখানার ৪ বছর বয়সী বাঘ নাদিয়া। মানুষের শরীর থেকে তার শরীরে প্রবেশ করেছে ভাইরাসটি। পরীক্ষা করে বাঘের শরীরে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম কোনো পশু আক্রান্ত হল।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নাদিয়া, তার বোন আজুল, আরো দুটি বাঘ এবং তিনটি আফ্রিকান সিংহ ‘শুকনো কাশির’ সমস্যায় ভুগছে। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার কারণে চিড়িয়াখানার বেশ কিছু সিংহ ও বাঘকে কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়। সেখানেই নাদিয়ার করোনা ধরা পড়ে। এমনই তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাগ্রিকালচারস ন্যাশনাল ভেটেনারি ল্যাবরেটরিজ।
চিড়িয়াখানার দেওয়া এক বর্তায় জানানো হয়েছে, ‘যদিও বাঘগুলোর ক্ষুধামন্দার সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে চিড়িয়াখানায় তারা পর্যবেক্ষণের মধ্যে আছে। তাদের পরিচারকের সঙ্গে বেশ সাড়া দিচ্ছে। ঠিক কিভাবে তাদের মধ্যে কনোরাভাইরাস ছড়ালো সেটা এখনো অজানা। কারণ, একেকটা প্রজাতি করোনাভাইরাসের সঙ্গে একেকরকম আচরণ করে। একেক প্রজাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে একেকরকম লক্ষণ প্রকাশ করে। তবে যতদিন পুরোপুরি সেরে না ওঠে ততোদিন বাঘগুলোকে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখবো।’
ধারনা করা হচ্ছে যেসব লোক বাঘগুলোর দেখভাল করে তাদের কোনো একজনের মাধ্যমে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। হয়তো ওই ব্যক্তির মধ্যে এখনো করোনাভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। কিন্তু তিনি ভাইরাসটি বহন করছেন। তাইতো চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আজ থেকেই সতর্ক হচ্ছে এ বিষয়ে। যারা যারা বাঘগুলো দেখভাল করছে তাদের পরীক্ষা করে দেখা হবে এবং চিড়িয়াখানা থেকে দূরে রাখা হবে।
এমন ঘটনায় যারপরনাই উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রের বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ সমিতি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গেল ১৬ মার্চ থেকে বন্ধ আছে নিউইয়র্কের ব্রোনক্স চিড়িয়াখানা। এবার কিনা চিড়িয়াখানার পশুরাই আক্রান্ত হয়ে গেল প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে!
তথ্যসূত্র : নিউইয়র্ক পোস্ট, বিবিসি ও সিএনএন।