রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবির)১০ সাংবাদিককে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘রাবিসাস অ্যালামনাই বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৩-২৪’ প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস্ কমপ্লেক্স ভবনের কনফারেন্স কক্ষে এক অনুষ্ঠানে অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের হাতে সম্মাননা স্মারক, সনদ ও নগদ অর্থ তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি অ্যালামনাই- এর আয়োজনে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি’তে (রাবিসাস) কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় অসামান্য অবদানের জন্য প্রথম স্থান অধিকার করেছেন দৈনিক দেশ রূপান্তরের রাবি প্রতিনিধি নোমান ইমতিয়াজ, যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছেন প্রথম আলো’র সাজিদ হোসেন ও খবরের কাগজের সিরাজুল ইসলাম সুমন এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছেন আজকের পত্রিকা’র রিপন চন্দ্র রায় এবং সমকালের অর্পণ ধর।এছাড়া ৫ জনকে বিশেষ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। তারা হলেন- দৈনিক বাংলা’র আসিফ আজাদ সিয়াম, কালবেলা’র সাজ্জাদ হোসেন, কালের কণ্ঠ’র মাহবুব হাসান, প্রতিদিনের বাংলাদেশের শাকিবুল হাসান এবং সাম্প্রতিক দেশকালের জাহিদুল ইসলাম।অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাবিসাস অ্যালামনাই- এর সভাপতি কে এম শহীদুল হক। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, রাবিসাসের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বুলবুল এবং প্রতিষ্ঠাতা সহ-সাধারণ সম্পাদক আহমদ সফিউদ্দিন।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাবিসাস অ্যালামনাইয়ের সাধারণ সম্পাদক রব মজুমদার।তিনি বলেন, ‘আমার সাংবাদিকতার গোড়াপত্তন রাবিসাস থেকে, যা এখন পর্যন্ত আপনাদের দোয়ায় বহমান আছে। বর্তমানে আমার যা কিছু সবকিছুর মূলেই রাবিসাস।’প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে মাঠের পরিস্থিতির সাথে সাংবাদিকতা মিলে না। বিগত দিনগুলোতে স্বৈরশাসনকে টিকিয়ে রাখতে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমাদের বিগত দিনের এই ভুলগুলো সুধরে নেওয়া উচিত। কোথায় ভুল করলাম আর কোন স্বার্থের কারণে দেশ, সমাজ এবং দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলাম না সাংবাদিকদের সেটা চিন্তা করা উচিত। আর বর্তমান পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে চাইলেই সেটি করা সম্ভব।’উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় গণমাধ্যম একটি বড় ভূমিকা পালন করে। তাঁরা আর দশটি সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন, যুক্তিবাদী এবং তথ্য নির্ভর। আমি মনে করি গণমাধ্যমে যারা কাজ করবে তাদের কোন রাজনৈতিক আদর্শ থাকা উচিত নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিগত সময়ে গণমাধ্যম অনেক বেশি পক্ষপাতদুষ্ট হতে দেখা গেছে। ফলে সাধারণ জনগণের গণমাধ্যমের উপর বিশ্বস্ততা নড়বড়ে হয়ে গেছে।’রাবিসাসের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস আমার শোক আর আনন্দের মাঝে ঘুরপাক খায়। শোক হলো ১৯৬৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহাকে হারানো আর আনন্দ হল রাবিসাসের জন্ম। রাবিসাসের অস্তিত্বকে ৫৬ বছর পরে হলেও মাটির প্রদীপের মতো জ্বালিয়ে রাখতে পেরেছি। এটাই আমার ৭৪ বছরের জীবনে সবচেয়ে বড় সাফল্য। ‘রাবিসাসের বর্তমান সভাপতি নোমান ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমরা যে কাজ করেছি সেটার একপ্রকার স্বীকৃতিস্বরুপ এই অ্যাওয়ার্ড। এই ধরণের পুরস্কৃত করার ধারাটা যদি অব্যাহত থাকে তবে যারা এই কাজ করছে, তারা কাজের প্রতি আরও বেশি অনুপ্রাণিত হবে।’অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদা নাসরিন কনক। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল। এসময় রাবিসাসের প্রাক্তনী ও বর্তমান সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।