স্টাফ রিপোর্টার: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের গ্রুপিং আর সহকারী শিক্ষকদের স্কুল ফাঁকি, চাঁদাবাজি-দুর্নীতির সিন্ডিকেট তৈরি, শিক্ষার্থী-প্রধান শিক্ষকদের সাথে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ব্যবহার, তুচ্ছ কথায় অসদাচরণ, কু-চক্রি সিন্ডিকেটের হোতা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক হোসেন শিমুলের নেতৃত্বে কতিপয় সহকারী শিক্ষকের ক্ষমতার দাপটের কারণে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা।জানা যায়, উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৯৬টি। প্রধান শিক্ষক রয়েছে ৫৬টি বিদ্যালয়ে। ৪০ টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। উপজেলার প্রাথমিকে মোট সহকারী শিক্ষক রয়েছেন ৫৪৯ জন। এদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছে ভয়াবহ ফাঁকিবাজ, ধান্দাবাজ। এরা নানান কৌশলে স্কুল ফাঁকি দিয়ে করেন ব্যবসা বাণিজ্য আর স্থানীয় রাজনীতি। এ দুষ্ট অক্ষে নাটের গুরু হিসেবে রয়েছে নানান অপরাধে অপরাধী শিক্ষা কর্মকর্তা শিমুল আর তার দোসর হিসেবে রয়েছে কতিপয় দুর্নীতিবাজ সহকারী শিক্ষক। এদের মধ্যে নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য মধ্য আলেকজান্ডার (২) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদ, উত্তর চর নেয়ামত সপ্রাবি সহকারী শিক্ষক মোমিন উল্যাহ, চর গজারিয়ায় চর সেভেজ সরকারী প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক লিংকন চন্দ্র দাস অন্যতম। লিংকন কখনো নদী পাড়ি দিয়ে স্কুলে যান নাই। বিদ্যালয়ের অফিশিয়াল সকল কাজ প্রধান শিক্ষকরা করলেও বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা সব সময়ই শিক্ষক বদলী, নোটিশের জবাব সহ নানান তদবিরে ব্যস্ত থাকেন উপজেলা পরিষদের শিক্ষা অফিসে বা অফিস পাড়ায়। তারা স্কুল ফাঁকি দিয়ে ঘুরঘুর করে শিক্ষা অফিসে-হাটবাজারে।এরমধ্যে সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদ এবং মোমিন উল্যাহ মেতে উঠে চাঁদাবাজির নতুন কৌশলে। তারা সহকারী শিক্ষক হয়েও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার নাম দিয়ে একটি স্মরণিকা প্রকাশের উদ্যেগ নেয়। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলে পক্ষে বিপক্ষে নানা প্রচারণা। উপজেলা শিক্ষা অফিসার-প্রধান শিক্ষক কিংবা বেশীরভাগ সহকারী শিক্ষকদের অন্ধকারে রেখে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক হোসেন শিমুলের প্ররোচনায় তারা খামখেয়ালীভাবে এ প্রকাশনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। কি উপলক্ষে, বাজেট কত এতে অর্থায়ন হবে কিভাবে, খসড়া কপি, সুনির্দিষ্ট কোন রূপরেখা দাঁড় না করিয়ে আগোছালো মনগড়া ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে স্মরণিকা প্রকাশের কার্যক্রম। ডোনারদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে শুধুমাত্র এ অসাধু চক্রটির আর্থিক বেনিফিসিয়ারী হওয়ার আশায় এমন পদক্ষেপ বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন সংক্ষুব্দ কিছু শিক্ষক। তারা প্রকাশনার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আদেশ এবং হুমকিমূলক শব্দ ব্যবহার করে। এতে করে সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক হোসেন শিমুল সহ সায়েদ মোমিনরা এ সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অন্ধকারে রেখে। প্রধান শিক্ষকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলেও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শিমুল তাদের সাথে অসদাচরণ করেন বলে জানা যায়।উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা শিক্ষা ভবনে তার অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সভা করেন জেলা প্রশাসকের আগমন উপলক্ষে অন্যদিকে একই দিন একই সময়ে স্কুল চলাকালীন শিক্ষা ভবনের নীচ তলায় সহকারী শিক্ষকদের নিয়ে স্মরণিকা প্রকাশের সভা করেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শিমুল। শিমুলের ক্ষমতার দাম্ভিকতায় অসহায় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ও শিক্ষকরা।সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শিমুলের বিরুদ্ধে রয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি এবং স্কুল ভিজিটের নামে চাঁদাবাজি, কোন ধরনের টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়া মধ্য চর মেহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেড পুরাতন ঘর ও পরিত্যক্ত টেবিল চেয়ার লোহালক্কর সহ প্রায় আশি মণ মালামাল তার হুকুমে বিক্রি করে লুফে নেন পুরো টাকা। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি, শিষ্টাচার লংঘনের নানান অভিযোগ রয়েছে।
মধ্য আলেকজান্ডার (২) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদ, উত্তর চর নেয়ামত সপ্রাবি সহকারী শিক্ষক মোমিন উল্যাহর কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ভিত্তিহীন।সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তারেক হোসেন শিমুল বলেন, আমি আমার রুটিন দায়িত্ব পালন করছি কোন অন্যায়ের সাথে জড়িত নয়। মধ্য চর মেহার সপ্রাবির মালামাল বিক্রি বিধিসম্মত ভাবে হয়েছে।এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার রূপাঞ্জলী কর জানান, তারা অনুমতি না নিয়ে স্কুল চলাকালীন সভা করাটা ঠিক হয়নি। প্রকাশনার বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে আমাকে অবগত করে। কারো বিরুদ্ধে কোন অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ উপজেলায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার প্রধান অন্তরায় শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং। যা কোন ভাবেই কাম্য নয়।উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমজাদ হোসেন জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।