শহীদুল ইসলাম শহীদ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: এখন যতদূর চোখ যায় চারিদিকে শুধু সবুজ আর সোনালী আমন ধানের সমারোহ। প্রতিটি ধান গাছ, লতা পাতায় ও ঘাসের উপরে জ্বলজ্বল করছে শিশির বিন্দু।ধান গাছের পাতার উপরেও যেন মুক্তা ঝরছে। ইতিমধ্যে আমনের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। অগ্রহায়ণ পৌষ পার্বণে কৃষকের মাঝে আমন ধান কাটা-মাড়াই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নবান্নের আনন্দে ভরে উঠছে কৃষকের বুক। চোখে মুখে ফুটে ওঠেছে আনন্দের ছাপ। তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙ্গনে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলেও এই উপজেলার মানুষ একমাত্র কৃষির উপর নির্ভরশীল।তার পরেও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় গত মৌসুমের তুলনায় এবার আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,এবার উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৫ টি ইউনিয়নে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৮৫২ হেক্টর অতিক্রম করে ৩০ হাজার ৭শত ৭৯ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ৯৩৭ হেক্টর বেশি।
কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত ফলনশীল কৃষি বীজ বিতরণ,ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক অনুদান, কৃষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।অনুকুল আবহাওয়া থাকলে কাটা-মারাই শেষে আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে চলতি মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছালিয়ে যাবার সম্ভাবনার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।অপরদিকে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদী বিধৌত উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, কাপাসিয়া, শ্রীপুর, চন্ডিপুর,কঞ্চিবাড়ি,শান্তিরাম ও দহবন্দ সহ উপজেলার পৌরসভা এলাকায় নদ-নদীর বুকে চর জেগে উঠেছে। ফলে এসব এলাকায় চর গুলোতে নানা ফসলের সমারোহ লক্ষ্য করা গেছে।নদীর চর গুলোতে নানান ফসলের সমারোহ লক্ষণীয় ।সামাজিক প্রতিনিধি ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এসব ফসলের মাঠ ঘুরে জানান,কৃষক কৃষাণীরা ফসল উৎপাদনের দিক থেকে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছেন।নদ-নদী বিধৌত বন্যা পরবর্তীতে পলি পড়া কিছু চরে বিনা চাষে ও পরিচর্যার মাধ্যমে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রাশিদুল কবির আশাবাদী হয়ে বলেন,এই উপজেলায় আমন ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে পোকা মাকড় নিধনে কীটনাশক প্রয়োগে কৃষকদের পর্যাপ্ত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন অন্যান্য উপজেলার তুলনায় এ উপজেলার ধান ক্ষেতে ইঁদুরের তেমন প্রভাব নেই। ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে কৃষকদের বিষটোপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত উপজেলার কোন অঞ্চলে আমনের জমিতে ইঁদুরের উপদ্রবের খবর পাওয়া যায়নি।