নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশের উগ্রবাদের উপস্থিতি নিয়ে ভারতীয় উদ্বেগ নাকচ করে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। কোনো দলের না না নিয়ে তিনি বললেন, ‘শুধুমাত্র একটি দল ছাড়া বাকি সবাই উগ্রবাদী’-তাদের (ভারতের) এমন মনোভাবের পরিবর্তনটা জরুরি। উপদেষ্টা ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ‘আওয়ামী লীগ প্রীতি’র প্রতি ইঙ্গিত করেন। বুধবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপে তিনি এ নিয়ে কথা বলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’র খবরে জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটনের জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সেখানে বাংলাদেশে উগ্রবাদের উপস্থিতি নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয় তাদের এই ন্যারেটিভ পরিবর্তন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে একটি দল ছাড়া বাকি সবাই উগ্রবাদী। এ ধরনের একটা ন্যারেটিভ প্রচার করা হচ্ছে দেশটির মিডিয়াতে। আমি মনে করি, এটা থেকে ভারতের বের হয়ে আসা প্রয়োজন। তৌহিদ হোসেন বলেন, দ্বিতীয় কথা হলো- আমাদের কাছে যে তথ্য আছে এখানে উগ্রবাদীরা বিরাট কিছু করে ফেলছেÑ এ রকম না। সরকারে যারা আছেন তাদের কারও এ ধরনের কোনো এজেন্ডা নেই, এরকম কোনো ব্র্যাকগ্রাউন্ড নেই। আমার মনে হয়, তাদের এ বক্তব্য থেকে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। এটা দু’দেশের সম্পর্কের জন্য ভালো হয়।
পূজায় ইলিশ চায় ভারত, উপদেষ্টা যা বললেন-
এদিকে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ইলিশ রপ্তানির জন্য চিঠি পাঠিয়েছে ভারতের ফিস ইমপোর্টার এসোসিয়েশন। ইলিশ চেয়ে পাঠানো চিঠিটি উপদেষ্টার হাতে পৌঁছেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি ১৫ মিনিট আগে কাগজটা দেখেছি এবং আমি বলেছি যে, এটা সরকারের যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আছে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা তো আর মাছ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেই না। ইলিশ চেয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে আবেদন বিষয়ে ফিস ইমপোর্টার এসোসিয়েশনের সম্পাদক আনোয়ার মাকসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রত্যেক বছর পুজোর আগে একটা চিঠি দিই। যেন বাংলাদেশ থেকে পুজোর আগে ইলিশ পাঠান। এই বছর আগস্টে তো ঝামেলা হলো বাংলাদেশে। সেই কারণে আমরা আগস্ট মাসে চিঠি দিইনি। এখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে বলে আমরা একটা আবেদন করেছি। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন দপ্তরে ই-মেইল পাঠিয়েছি। কমার্স সচিব, এডভাইজার তৌহিদ সাহেব সবাইকে চিঠি পাঠিয়েছি যাতে প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরও পুজো উপলক্ষে ওনারা আমাদের ইলিশ দেন। আনোয়ার মাকসুদ বলেন, বাংলাদেশের ইলিশ না আসায় বাজারে ইতিমধ্যেই চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দামও কিছুটা বেশি আছে। যে মাছ হাজার বারোশ’ রুপিতে বিক্রি হয়, সেই মাছ দেড় থেকে দুই হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া এপারের বাঙালিদের কাছে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের বরাবর একটা চাহিদা আছে। দাম বেশি হলেও ক্রেতারা কেনে। আমরা আশা করি এই ঝামেলার মধ্যেও পুজোর সময় ওনারা আমাদের ইলিশ দেবেন। বাঙালির পাতে ইলিশ থাকবে না সেটা ভাবাই যায় না।