নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রায়হান রহমতুল্লাহ’কে একটি হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান রিমুর সমর্থকরা মাদারগঞ্জে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া তারা আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুরো উপজেলায় হরতালের ডাক দেয়। সোমবার (০১জুলাই) দুপুরে জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন। প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারীরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।রায়হান রহমতুল্লাহ মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ২০২০ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি বাজারে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন সার ব্যবসায়ী নওশের আলী। এরপর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সেই হত্যা মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে রায়হান রহমতুল্লাহর নাম উঠে আসে। পরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়ে আসেন। গতকাল রোববার তাঁর জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। আজ সোমবার ওই আদালতে জামিন আবেদন করেন তিনি। পরে ওই আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।এব্যাপারে মাদারগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানের সমর্থক মো. হাসানুজ্জামান সাগর বলেন, ওই মামলার ঘটনাস্থল আমার ওয়ার্ডের মধ্যেই। ওই ঘটনাটি ২০২০ সালের। তখন চেয়ারম্যানের নামে মামলা হয়নি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত ঘোষণা করেন। এর পর থেকে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কারণ, ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন রায়হান রহমতুল্লাহ। তাঁকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করা সম্ভব নয়। সেই বিষয়টি একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল বুঝতে পারে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ওই হত্যা মামলায় নির্বাচনের আগে অন্যায়ভাবে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে চেয়ারম্যানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাঁকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি চলবে।এবিষয়ে মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, মাদারগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে তাঁর অনুসারীরা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ করেছে। আমরা কয়েকটি সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছেন। তাঁদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি, যাতে তাঁরা জানমালের ক্ষতি না করেন। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।