নুরে আলম হাওলাদারঃ শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীর ডানতীর বেড়িবাঁধ ‘জয়বাংলা এভিনিউ’ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান বিশেষভাবে উদযাপনের জন্য ৩৫০ জন জেলে তাদের নৌকা বর্ণিল সাজে সাজিয়েছেন। তারা সেই নৌকা পদ্মায় ভাসিয়ে যোগ দিয়েছেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে।আজ সোমবার সকাল সাতটার দিকে জেলেরা তাদের নৌকা নিয়ে নড়িয়ার মুলফৎগঞ্জ ঘাটে যান। ৩৫০টি নৌকা নড়িয়া নদী রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে নোঙর করে রাখা হয়। বিভিন্ন রঙের বেলুন, জাতীয় পতাকা, আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে নৌকাগুলো সাজানো হয়।শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম স্থানীয়দের নিয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠান উদযাপন করেন। জেলেরা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।তারা বলছেন, নদী ভাঙন থেমেছে। তাই তো অনুষ্ঠানে সাড়ে তিনশ’ নৌকা বর্ণিল সাজে সাজিয়ে এনেছি।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় পানিসস্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।নড়িয়ার চরাত্রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনায়েত উল্লাহ মুন্সী বলেন, আমরা নড়িয়ার হাজারো মানুষ পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে নড়িয়ায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে নদী ভাঙন থেমেছে। তাই তো তার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমরা সাড়ে তিনশ’ নৌকা বর্ণিল সাজে সাজিয়ে এনেছি।নড়িয়ার চরআত্রার বাসিন্দা জেলে মজিবর সিকদার বলেন, বসত-ভিটা পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মাছ শিকার করি। আজ সন্তানদেরকে নিয়ে নৌকা সাজিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি।নড়িয়ার কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিহির চক্রবর্ত্তী বলেন, নড়িয়ার দুর্গম চরের চারদিকে নদী আমাদের উন্নয়নে বাঁধা সৃষ্টি করেছিল। সেই উন্নয়নবঞ্চিত চরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মার তলদেশ দিয়ে পৌঁছেছে বিদ্যুৎ। নদী ভাঙন রোধে নড়িয়ায় নির্মাণ করা হয়েছে বাঁধ। এসব উন্নয়নকাজের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ভাইয়ের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তাই তো সাধারণ মানুষ বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, ৪ বছর আগেও নড়িয়ায় নদী ভাঙন ছিল। হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে এখন আর নড়িয়ায় নদী ভাঙন নেই। ভাঙন কবলিত নড়িয়ায় এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরের ভাঙন রোধ হয়েছে বাঁধের কারণে। বাঁধ নির্মাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি তত্ত্বাবধানে। এ জন্য নড়িয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।