ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ খবর

২৭ বছর পর গর্ভধারণ ডাক্তারের ঔষধ খাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই গর্ভপাত


ডিসেম্বর ১১, ২০২৫ ১:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:   দীর্ঘ ২৭ বছর পর গর্ভে সন্তান আসে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা অচিন্তানগর গ্রামের গৃহবধূ মোছাঃ শিরিনা খাতুনের গর্ভে, এই সুখবর আত্মীয় স্বজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সকলেই নতুন অতিথি আগমনের দিন গুনতে থাকে কিন্তু এর মধ্যে ঘটে যায় হৃদয়বিদারক এক ঘটনা, ৮ ডিসেম্বর বিকালে গৃহবধূ শিরিনার সামান্য ব্লিডিং হয়, অনেক সাধনার পর আগত নতুন অতিথির যেন সামান্য সমস্যা না হয় সেই জন্য ডাক্তার দেখাতে চান শিরিনা,

যোগাযোগ করেন একই গ্রামের কোয়াক ডাক্তার ইসলাম এর সাথে, কোয়াক ডাক্তার ইসলাম, শিরিনা কে পরামর্শ দেন ঝিনাইদহ শহরের মডার্ন মোড়ে অবস্থিত, সবুজ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার জন্য, এরপর সবুজ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ সবুজ, ডাঃ ফয়জুন নেসা রুনু নামের একজন নারী চিকিৎসক কে দেখানো পরামর্শ দেন, গৃহবধূ শিরিনা ডাঃ ফয়জুন নেসা রুনু কে দেখালে তাকে ডাক্তার কিছু টেস্ট দেন, টেস্ট করানোর পর ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ঔষধ কিনে রাত সাড়ে নয়টার সময় বাড়িতে ফেরেন, রাতের খাবার খাওয়ার পর ডাক্তার ফয়জুন নেসা রুনুর দেওয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ সেবন করেন, ঔষধ খাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই তার গর্ভপাত হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন মোছাঃ শিরিনা খাতুন, এরপর রক্তপাত শুরু হলে তাকে দ্রুত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরদিন ৯ ডিসেম্বর সকালে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার রাউন্ডে এসে রুগীর মামীকে জানান, ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তার গর্ভপাত হয়েছে, এরপর দুই ব্যাগ ব্লাড ও চিকিৎসা নিয়ে ঐদিন বাড়িতে ফেরেন তারা, ভুক্তভোগীর স্বামী বাবুল জানান, আমার স্ত্রী এখনও খুব অসুস্থ, কিন্তু গ্রাম থেকে হাসপাতালে আসা যাওয়ার সমস্যা হওয়ায় আমরা ডাক্তারকে বলেছি ওষুধপত্র লিখে আমাদের ছেড়ে দিতে, এখন আমার স্ত্রী ভীষণ অসুস্থ,

এ ব্যাপারে ডাক্তারের বক্তব্য জানার জন্য সবুজ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গেলে , ডাক্তার ফয়জুন নেসা কে পাওয়া যায়নি, রিসিপশন থাকা একজন ব্যক্তি জানান, শহরে হামদহ এলাকায় অবস্থিত তিনি তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান, ক্যাপিটাল জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার রুগী দেখছেন, এরপর অত্র প্রতিষ্ঠানে রিসিপশনে গিয়ে ডাক্তারের খোজ করলে, রিসিপশনে থাকা ব্যক্তি জানান তিনি নাই, কোথায় আছে জিগ্যেস করলে তিনি বলেন আমি জানিনা, ডাক্তার ফয়জুন নেসার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তার সাথে দেখার কথা বললে তিনি জানান আমি এখন বাসায় আছি, তার চিকিৎসায় গর্ভপাত হয়েছে কিনা জিগ্যেস করলে তিনি জানান , আমার চিকিৎসায় গর্ভপাত হয়নি, আমি কোন ভুল চিকিৎসা করিনি, ডাক্তারের সাথে কথা বলার পরপরই তিনি বিভিন্ন লোক দিয়ে তদবীর শুরু করেন সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য, এমনকি অজ্ঞাত এক নারীকে দিয়ে ফোন করিয়ে হুমকি দেন এই প্রতিবেদক কে, এরপরই এই চিকিৎসক সম্পর্কে নতুন তথ্য আসে, বিএমডিসি’র ওয়েবসাইটে তার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার এ- ৯৩১৭৩ যাচাই করে দেখা যায় যে ০১/০৭/২০২৫ তারিখে ৩ বছরের জন্য তার রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেছে বিএমডিসি,ডাক্তার ফয়জুন নেসা কে ১০ ডিসেম্বর পুনরায় ফোনে জানতে চাওয়া হয় যে বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন বাতিল হবার পর তিনি চিকিৎসা দিতে পারেন কিনা,উত্তরে ফয়জুন নেসা জানান, তিনি চিকিৎসা দিতে পারেন তার কাছে হাইকোর্টের রায় আছে, ঝিনাইদহ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোঃ কামরুজ্জামান এর নিকট ডাঃ ফয়জুন নেসার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
বিগত সিভিল সার্জন তার নামে বিএমডিসিতে অভিযোগ পাঠান, বিএমডিসি তদন্ত করে তার অপরাধের সত্যতা পান তারপর তার রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করেন, তিনি হাইকোর্টের রায় পেয়েছেন এটা ব্যক্তিগত আমাকে জানিয়েছেন, তবে আমি কোন চিঠি পায়নি, তিনি এখন প্রাকটিস করছেন এটা সম্পূর্ণ অবৈধ, আমাকে জানালেন আমি ব্যবস্থা নেবো।

তথ্য নিয়ে আরো জানা যায়, সবুজ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোঃ সবুজ তিনি ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্ডিওগ্রাফার, হাসপাতালে চাকরি করে তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে ও গ্রামের কোয়াক ডাক্তার মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠানে রুগী এনে অপচিকিৎসা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেন, যাচাই-বাছাই না করে একজন রেজিষ্ট্রেশন বাতিল ডাক্তার কে তিনি তার প্রতিষ্ঠানে বসাতে পারেন কিনা জানতে চাইলে মোঃ সবুজ জানান, ডাক্তার ফয়জুন নেসা, গতকালও দুটি সিজারিয়ান অপারেশন করেছে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে, সিভিল সার্জন অফিসের সকল কর্মকর্তাই এগুলো জানেন, তাহলে আমার এখানে বসলে সমস্যা কি।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।