স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক দীর্ঘ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। কর্মশালায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা কয়েকদিন ধরে অংশ নিচ্ছেন এবং দলীয় নীতি, শাসনব্যবস্থা, উন্নয়নপরিকল্পনা ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করছেন।
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন,
4“আমাদের নেতা খুব শিগগিরই আমাদের মাঝে থাকবেন। তিনি দেশে ফিরলে যেন পুরো বাংলাদেশে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়—এই প্রস্তুতি রাখতে হবে। সে দিন আমরা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক চেহারায় পরিবর্তন আনতে চাই।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বিএনপি এখন শুধু নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না; বরং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠন এবং একটি মর্যাদাবান রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য সামনে রেখে এগোচ্ছে। তারেক রহমানের বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা, নীতি ও উন্নয়নদৃষ্টি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই দল বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে চায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন,
“বর্তমান সংগ্রাম হচ্ছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। বাধা, অপপ্রচার, রাজনৈতিক চাপ—সবকিছু মোকাবিলা করে আমাদের জয়লাভ করতেই হবে। কারণ এই জয়ই আমাদের জাতীয় অগ্রযাত্রার সুযোগ সৃষ্টি করবে।”
তিনি দাবি করেন, বিএনপি কখনও সংগ্রাম থেকে পিছিয়ে যায়নি এবং দল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও সামনে এগোবে।
তার বক্তব্যে তিনি দলীয় ঐক্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন:
“বিএনপি একটি গণমানুষের দল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী দল এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামের ধারক। ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য ছাড়া কোন লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।”
১৯৭১ সালের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন,
“একাত্তর আমাদের অস্তিত্ব—এটা ভুলে গেলে চলবে না। আজকে দেখলাম কেউ কেউ ১৯৭১ সালের প্রজন্মকে নিকৃষ্ট বলার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এ ধরনের মন্তব্য ঔদ্ধত্য ছাড়া আর কিছু নয়।”
তিনি এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন যে দেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ নিয়ে অবমূল্যায়নমূলক মন্তব্য জাতির প্রতি অবমাননা।
কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, এবং পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। বিভিন্ন সেশনজুড়ে অংশগ্রহণকারী নেতারা অর্থনীতি, প্রশাসনিক সংস্কার, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক সংগঠনের আধুনিকীকরণসহ নানা বিষয়ে বক্তব্য দেন।
পুরো কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল দলের ভবিষ্যৎ রূপরেখা আরও সুসংহত করা এবং নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

