নিজস্ব প্রতিবেদক: তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলো আইন লঙ্ঘন করলে বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে কেন্দ্র করে কমিশনের প্রস্তুতি, প্রক্রিয়া ও নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি কার্যকর হবে। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি যদি আইন না মানে, তাহলে নির্বাচন কমিশন বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সবার জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা এবং সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পোস্টাল ব্যালটসংক্রান্ত বিষয়েও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।
সরকারি চাকরিজীবী, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা–কর্মচারী এবং আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। এ জন্য একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন, আর অ্যাপল ডিভাইসের জন্য অ্যাপটি পরবর্তীতে উন্মুক্ত করা হবে।
তিনি জানান—
- তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পোস্টাল ব্যালটের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
- পোলিং অফিসারদের নিবন্ধন ১৬–১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
- আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের নিবন্ধন করা যাবে ২১–২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।
সীমানা নির্ধারণ ও আসনসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন—
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি আসনেরই তফসিল ঘোষণা করা হবে। গাজীপুর ও বাগেরহাটের কিছু এলাকার সীমানা নিয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হচ্ছে, যা তফসিলে প্রতিফলিত হবে।
তিনি আরও জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসিরুদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করবেন। তফসিলে ভোটগ্রহণের তারিখ, মনোনয়নপত্র উত্তোলন–জমা–বাছাই–প্রত্যাহারের সময়সীমা, প্রার্থীদের আচরণবিধি, ভোটারদের জন্য নির্দেশিকা এবং নির্বাচন সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা হবে।
নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন।
তফসিল ঘোষণাকে ঘিরে নির্বাচন ভবন ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। যেকোনো অনিয়ম বা অনভিপ্রেত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
আখতার আহমেদ শেষে আশা প্রকাশ করেন—
‘এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে। সব রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে চাই।’

