ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা মহাসড়কের পাশে সরকারি জায়গায় গজিয়ে উঠেছে জমজমাট বালুর ব্যবসা, এমনকি পাড়া-মহল্লার মধ্যে অবস্থিত রাস্তার পাশের খালি জায়গায়ও চলছে বালুর ব্যবসা,শহরের মধ্যে ঘুরে দেখা যায়, ঝিনাইদহ শিশু একাডেমির প্রবেশ পথের ধারেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে বালুর ব্যবসা, শহীদ মসিউর রহমান সড়কের পাশে অবস্থিত জবেদা খাতুন একাডেমির চারপাশ জুরে একাধিক ব্যবসায়ী বালু রেখে খুচরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন, এতে করে ঐ এলাকায় সব সময় বায়ুদূষণ হচ্ছে, মাস্ক ছাড়া চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে,
শহীদ মশিউর রহমান সড়েকের প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার দুপাশেই সরকারি জায়গা দখল করে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কতিপয় ব্যবসায়ী, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, আমার বাড়ির প্রবেশের প্রধান রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বালুর ব্যবসা করছে, এতে করে শিশু,বৃদ্ধা সহ সকল বয়সের মানুষ এ্যাজমা, হাপানি, সহ ফুসফুস জনিত জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না আমি বুঝতে পারছি না,ঝিনাইদহ শিশু একাডেমিতে পড়ুয়া এক ছাত্রের মা জানান, এই পথ দিয়ে আসা যাওয়ার সময় প্রতিবার আমার নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হয়। সাংবাদিক শাহিদুর রহমান
জানান, যত্রতত্র বালুর ব্যবসার পাশাপাশি শহরের মধ্যে কয়েকশো ভবন নির্মাণের কাজ চলছে, এই ভবন নির্মাণকারীরা কেউ কোন নির্মাণ সামগ্র ঢেকে রাখেনা,এতে করে শহরে ভয়ংকর বায়ুদূষণের সৃষ্টি হয়েছে, পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান করে নামমাত্র জরিমানা করছে, সামান্য শাস্তি হওয়ায় তারা কিছু মনে করছে না, পরেরদিনই আবার তারা ব্যবসা চালু করছে, এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করতে হলে, বায়ুদূষণ নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ করে কঠিন শাস্তির আওয়ায় আনতে হবে,
এ ব্যাপারে জানার জন্য ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মোঃ মুন্তাছির রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা ইতিমধ্যে ৫টি অভিযান পরিচালনা করেছি, কয়েকজন কে শাস্তির আওয়াত এনেছি,আমাদের অভিযান চলমান থাকবে,‘বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২’ অনুযায়ী বায়ুদূষণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হবার বিধিমালা রয়েছে
নির্মাণ কার্যক্রম থেকে দূষণ রোধে আইনে বলা হয়েছে,
রাস্তা, ড্রেন, ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, মেরামত বা সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ছয়টি ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্মাণস্থলে যথাযথ অস্থায়ী ছাউনি বা বেষ্টনী স্থাপনসহ নির্মাণাধীন ভবন আচ্ছাদিত রাখতে হবে। সব ধরনের নির্মাণসামগ্রী (মাটি, বালি, রড, সিমেন্ট, ইত্যাদি) আবৃত বা ঢেকে রাখতে হবে। নির্মাণসামগ্রী (মাটি, বালি, সিমেন্ট, ইট, ময়লা-আবর্জনা) পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক, ভ্যান বা লরি আবৃত বা সম্পূর্ণভাবে ঢেকে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া মাটি, বালি, সিমেন্ট, ইট, ময়লা-আবর্জনা, ইত্যাদি পরিবহন ও নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ট্রাক, ভ্যান বা লরির চাকার কাদা-মাটি বা ময়লা-আবর্জনা সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করে রাস্তায় চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।নির্মাণসামগ্রী (মাটি, বালি, সিমেন্ট, ইত্যাদি) রাস্তায়, ফুটপাতে বা যত্রতত্র ফেলে রাখা যাবে না এবং নির্মাণকাজে সৃষ্ট বর্জ্য খোলা অবস্থায় সংরক্ষণ বা পোড়ানো যাবে না। এছাড়া নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ বা মেরামত স্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি বা ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণকারী কেমিক্যাল ছিটাতে হবে।
এসব নিয়ম না মানলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে,এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাজিব চক্রবর্তী জানান, বায়ুদূষণের এর কারণে ফুসফুস জনিত রোগের সংখ্যা বেড়েছে, এ্যাজমা, হাপানি, এলার্জি সহ জটিল ও কঠিন রুগীর সংখ্যা বাড়ছে।

