স্টাফ রিপোর্টার: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও শহীদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। এ কর্মসূচিতে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়, যার ফলে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অতিক্রম করে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। সেখানে পৌঁছে তারা সড়কের ওপর বসে পড়ে এবং অবরোধ কর্মসূচি পালন শুরু করে। এ সময় শাহবাগ দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন আটকে পড়ে, ফলে আশপাশের সড়কগুলোতেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে শুক্রবার সকালে ইনকিলাব মঞ্চের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ঘোষণার মাধ্যমে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাদ জুমা দেশব্যাপী দোয়া-মোনাজাত ও বিক্ষোভ মিছিলের আহ্বান জানানো হয়। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই ঢাকায় শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানান সংগঠনের নেতারা।
শাহবাগে অবস্থানকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এর মধ্যে ছিল— ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ্য হাদি—লড়াই করে’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’সহ আরও নানা প্রতিবাদী স্লোগান। স্লোগানের মাধ্যমে তারা হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করার পাশাপাশি সরকারের প্রতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
অবরোধ চলাকালে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, শহীদ ওসমান হাদি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ চত্বরে রাত্রিযাপন করতেও প্রস্তুত আছেন বলে তিনি ঘোষণা দেন। তিনি আরও বলেন, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে রিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরীফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে এবং বিভিন্ন মহল থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি ওঠে।

