

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সভায় দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতেই তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন মোনাজাত পরিচালনা করেন।
সভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা এবং আগামীকাল এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া, তার মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়, যা সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, তথ্য উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান পাঠ করেন।
রাষ্ট্রীয় শোকের তিন দিন দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একই সঙ্গে আগামীকাল দেশের প্রতিটি মসজিদে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে। অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও একইভাবে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক বই খোলা হবে, যাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের শোক প্রকাশ করতে পারেন। সভায় বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও জানান, আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও এর সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সরকার তার দাফন ও জানাজার সমস্ত ব্যবস্থাপনায় সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজ আমরা গভীর শোকের মধ্যে একত্রিত হয়েছি। পুরো জাতি বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছে, যাতে তিনি আমাদের সঙ্গে আরও অনেক বছর থাকতেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। জাতির পক্ষ থেকে আমরা তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। তার দাফন ও জানাজার জন্য যা যা প্রয়োজন, সরকার তা নিশ্চিত করবে।”
স্মৃতিচারণকালে তিনি আরও বলেন, “সর্বশেষ আমার সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার দেখা হয়েছিল ২১ নভেম্বর, সশস্ত্র বাহিনী দিবসে। সেদিন তিনি অত্যন্ত উৎফুল্ল ছিলেন এবং অনেকক্ষণ আমার সঙ্গে আলাপচারিতা করেছেন। আমার ও আমার স্ত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন। যদিও নিজে অসুস্থ ছিলেন, তবু সবসময় অন্যের কল্যাণ ও সুস্থতার প্রতি তার আন্তরিক উদ্বেগ ছিল। জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার উপস্থিতি আমাদের জন্য অপরিহার্য ছিল। তার চলে যাওয়া আমাদের জাতির জন্য একটি বিরাট ক্ষতি।”
সভায় আরও আলোচনা হয়, বেগম খালেদা জিয়ার স্মৃতিচারণ ও অবদানের প্রতি সম্মান জানাতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আগামী দিনে স্মৃতিসৌধ, আলোচনাসভা ও অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও তার জীবন ও কর্মকে স্মরণ করে বিশেষ পাঠচক্র ও সেমিনারের আয়োজনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭