

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ও বাংলাদেশ কুরআন প্রচার ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত "রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, নৈতিক ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে শিক্ষার সর্বস্তরের আরবি ভাষা অন্তর্ভূক্তিকরণ" শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এ দাবি করেন। শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে (IIER) সেমিনার টি অনুষ্ঠিত হয়েছে।সেমিনারে বক্তারা বলেন, "আরবি ভাষার দক্ষতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে শিক্ষার্থীরা আরও উন্নতি লাভ করবে। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের প্রবাসীরা আরবি ভাষার দক্ষতা না থাকায় তারা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। ভালো কাজ পাচ্ছে না। শ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিকও পাচ্ছে না। অথচ আরবী ভাষায় দক্ষজনশক্তির মাধ্যমে আমাদের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের অবারিত সুযোগ রয়েছে।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক ইকোনমিক মিনিস্টার ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি হিসেবে অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুল আলম- উপাচার্য, ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. আবুল হাসান এম সাদেক- প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ,অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম- উপ-উপাচার্য, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, জনাব মুনীরুজ্জামান ভূঁঞা যুগ্ম সচিব- কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়; অধ্যাপক ড. এবি এম ছিদ্দিকুর রহমান আশরাফী- ডীন, থিউলজী এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, ইবি; অধ্যাপক ড. আবদুল কাদির-আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক এইচ এম মোশারফ হোসেন- চেয়ারম্যান, ফিন্যান্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মুফতী মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহিল বাকী আন-নাদাভী - সিনিয়র পেশ ইমাম, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ,ড. মোঃ আবদুল আজিজ- মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অফ ইসলামিক থট, জনাব মোঃ আনিছুর রহমান- পরিচালক, IBRPD, বাংলাদেশ ব্যাংক, মোঃ মাকসুদুর রহমান,ডিএমডি- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ , অধ্যাপক ড. সদরুদ্দীন আহমদ- অধ্যক্ষ সরকারী তিতুমীর কলেজ ,ড. মোহাম্মদ হেদায়েতুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল কাদের- ইবি,অধ্যাপক ড. এ.কে. মুহাঃ নূরুল ইসলাম,অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল বারী , ড. মোঃ খলিলুর রহমান মাদানী,মোঃ মোতাহার হোসেন মোল্লা, রেমিট্যান্স বিভাগ, আইবিবিএল,
অধ্যাপক ড. মোঃ সামছুদ্দিন, আইইউটি, ল্যাং কর্ণেল অবঃ নুরুজ্জামান এড. সাবিকুন্নাহার মুন্নী, কাজী সাঈদা খাতুন,ড. রাফিয়া সুলতানাসহ আরো অনেকে ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে রাখেন অধ্যাপক ড.মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক, ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (IIER), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, এডভোকেট মোঃ নূরুজ্জামান, মহাসচিব, বাংলাদেশ কুরআন প্রচার ফাউন্ডেশন।
বক্তারা বলেন, বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা, মায়ের ভাষা শুদ্ধভাবে শেখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে ভিন্ন ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করার গুরুতর ভুল আমরা অতীতে করেছি, যার ফল আজ স্পষ্ট। বিশ্বের প্রায় ৪২ টি দেশের মানুষ আরবিতে কথা বলে। ভারত-নেপালসহ বিভিন্ন এশীয়ার দেশগুলো আরবি ভাষার দক্ষতা দিয়ে অনেক বড় রেমিট্যান্স আয় করে যাচ্ছে। এজন্য সর্বস্তরে আরবি ভাষা প্রতিষ্ঠা করার জোর উদ্যোগ নিতে হবে।
মানবসম্পদ তৈরিতে কীভাবে আরবি ভাষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তা দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। পেশাক শিল্পের ক্ষেত্রে বায়ারদের সঙ্গে যোাগাযোগ করতে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হয়। তেমনি মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শ্রমবাজারে আরবি ভাষাকে কাজে লাগাতে পারি। আজকে আমাদের দাবি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে আরবি ভাষা চালু করতে হবে। ভাষার দক্ষতা অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৮৫ শতাংশ মুসলমানের এই দেশে নীতি-নির্ধারকরা আরবী ভাষাকে কখনোই অর্থনৈতিক প্রয়োজন, ধর্মীয় প্রয়োজন কিংবা নৈতিক প্রয়োজনের কারণে সার্বজনীন করেননি। তারা আরবী ভাষার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক তৈরি করেননি, কিংবা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির লক্ষ্যে এটি শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভুক্তও করেনি। আজ বাস্তবতার তাগিদে নতুন করে ভাবতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি আরবভাষী দেশে কর্মরত থেকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন, যা জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ জোগান দিচ্ছে। তবে এ শ্রমশক্তির বড় অংশ আরবী ভাষা ও সংস্কৃতিতে দক্ষ নয়। ফলে কর্মক্ষেত্রে যোগাযোগ সমস্যার কারণে তারা প্রায়ই সুযোগ হারান, এমনকি দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও প্রাপ্য মর্যাদা ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
বক্তারা আরো বলেন, কেবল ভাষাগত দক্ষতাই যথেষ্ট নয়। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা মূলকভাবে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ, সততা ও পরিশ্রমের মূল্যবোধে গড়ে ওঠা সুনাগরিক। শিশুকাল থেকেই ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক নৈতিক শিক্ষা প্রদান করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একজন দক্ষ, বিশ্বস্ত ও নীতিবান কর্মী হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রাথমিকসহ সকল স্তরের শিক্ষায় আরবী ভাষা ও ইসলামী মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭