

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে চরম অনিয়ম। ভর্তি ওয়ার্ডে দেখা গেছে, নার্সরা বসে থাকলেও আয়া ও সুইপাররা রোগীদের ক্যানোলা লাগানো, ইনজেকশন দেওয়া এবং স্যালাইন পুঁশ করার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন। এর বিনিময়ে রোগীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা।প্রতিবেদক ভর্তি ওয়ার্ড সরেজমিনে ঘুরে দেখে, আয়া ও সুইপারের রোগীদের টাকার বিনিময়ে নার্সিং সেবা দিচ্ছে। সরেজমিনে এও দেখা যায়, একজন পুরুষ আয়া কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতেই ইনজেকশন পুঁশ করছে। এ সময় ডিউটি রুমে একজন নার্সকে অবসর বসে থাকতে দেখা যায়। রোগীরা জানান, এমন দৃশ্য এ হাসপাতালে প্রতিদিনই দেখা যায়।স্থানীয় সাংবাদিক আ.ন.ম. হাসান বলেন, “কয়েকদিন আগে মেয়েকে ভর্তি করাই। নার্স থাকা সত্ত্বেও এক বহিরাগত ছেলে ক্যানোলা দিয়েছে। পরে জেনেছি সে সুইপার, এসব কাজে তার কোনো বৈধতা নেই।”
আরেক রোগীর স্বজন সরোয়ার অভিযোগ করেন, “আমার বাবাকে স্যালাইন পুঁশ করেছেন ১৮–১৯ বছরের এক ছেলে। পরে জানতে পারি, সে হাসপাতালের সুইপার।”রোগীরা জানান, ক্যানোলা লাগাতে বা ইনজেকশন দিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। জরুরি বিভাগ থেকে জরুরীসেবার জন্য রোগী এলে ক্যানোলা কিংবা ইনজেকশন দিতে নেয়া হয় ৫০ টাকা। অথচ সরকারি হাসপাতালে টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ।জানা গেছে, হাসপাতালের প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে জনবল সংকটের কারণ দেখিয়ে বহিরাগত কয়েকজনকে মাস্টাররোল বা মৌখিক চুক্তিতে আয়া, সুইপার ও পিয়ন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের দিয়ে ওয়ার্ডে ডিউটি করানো হয়। এ সুযোগে নার্সরা নিজেরাই এসব নন-মেডিক্যাল অস্থায়ী কর্মীদের ক্যানোলা ও ইনজেকশন দেওয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসাসেবা এখন মূলত তাদের হাতেই চলছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইনজেকশন ও ক্যানোলা সঠিকভাবে প্রয়োগ না হলে সংক্রমণ, রক্ত জমাট বাঁধা বা ওষুধজনিত প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে, যা প্রাণঘাতী হতে পারে। এছাড়াও হাসপাতালে আয়া–সুইপার ও বহিরাগত কর্মীদের হাতে ইনজেকশন ও ক্যানোলা দেওয়ার মতো দায়িত্ব অর্পণ শুধু অনিয়ম নয়, এটি রোগীদের জীবনের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকিও বটে।এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুল হক জানান, হাসপাতালে নার্স ছাড়া কেউই ক্যানোলা, ইনজেকশন, স্যালাইন পুঁশ করতে পারবে না। আয়া-সুইপার এসব পুঁশ করছে সেই বিষয়ে তিনি জানেন না। ঘটনা সত্য হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।এদিকে কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক জানান, মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়া-সুইপার দিয়ে ক্যানোলা, ইনজেকশন, স্যালাইন পুঁশ করা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই ধরণের কাজ রোগীর জন্য অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭