রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান কুঠিপাড়া এলাকায় স্বামীকে হেনস্তা করার উদ্দেশ্যে থানায় অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়েরের ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।জানা গেছে, পাইকান কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী স্মৃতি খাতুন বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গঙ্গাচড়া মডেল থানায় এজাহার দাখিল করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ সেটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। পরদিন (১৮ অক্টোবর) পুলিশ আব্দুল কাদেরকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার বাদী স্মৃতি খাতুনের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর সহকারী কাজী সোলায়মান হোসেনের বাড়িতে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক ও রেজিস্ট্রারী বিয়ে সম্পন্ন হয়। তার স্বামী কখনো তাকে কোন নির্যাতন করে নাই তবে তার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা তার বাবা মা কে হুমকি দিয়েছে। এই হুমকির জন্য পরে ১১ অক্টোবর স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় স্মৃতি খাতুন আব্দুল কাদেরের বাড়িতে গেলে পারিবারিক কলহের জেরে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় এবং অভিভাবকদের জিম্মায় ফিরিয়ে দেয়।
এদিকে এ ঘটনা ঘিরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিয়ে ছাড়াই দু’বছর ধরে সহবাস শিরোনামে খবর প্রকাশ পেলে বিষয়টি নতুনভাবে আলোচনায় আসে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাদী স্মৃতির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (৪২২৯৫১০২৮৬) অনুযায়ী তার স্বামীর নাম আব্দুল কাদের উল্লেখ আছে। একই সঙ্গেৎ তার স্বামীর সরকারী চাকরিজনিত (ইএফটি) তথ্যেও আব্দুল কাদেরের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে স্মৃতি খাতুনের নাম রয়েছে।প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদেরের প্রথম স্ত্রী মোছা: রীনা আক্তার ফাতেমা জানান, আমার স্বামী স্মৃতিকে দুই বছর আগে বিয়ে করেছে। তাকে আলাদা ঘর ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দিয়ে বাবার বাড়িতে রেখে পড়াশোনা করাচ্ছিল।এদিকে সহকারী কাজী সোলায়মান হোসেন বলেন, এবিষয়ে আমি কোন বক্তব্য দিবো না।
অন্যদিকে আলমবিদিতর ইউনিয়নের কাজী আব্দুল ওহাব জানান, সহকারী কাজীর নিকট যেই বিবাহ রেজিস্ট্রারের বই ছিল, সেখানে আব্দুল কাদের ও স্মৃতি খাতুনের বিয়ের কোনো এন্ট্রি পাওয়া যায়নি।গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও ওসি তদন্তের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ মো. ফারুকুজ্জামান বলেন, মলা দায়ের হয়েছে, তবে তদন্তেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।এ ঘটনায় সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে ,যদি প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী বিয়ে করে স্ত্রীকে স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও সরকারি নথিতে নাম উল্লেখ করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ কতটা যৌক্তিক?

 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
 
                                    
 
                                 
                                 
                                 
                                