কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির পরও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে হাত বাড়ালেই মিলছে সর্বনাশা মাদক। যৌথ বাহিনীর অভিযানে কয়েকজন মাদক কারবারি নিহত হলেও উত্তরসূরীরা অবাধে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী উদ্যোগে সচেতনতামূলক মানববন্ধন ও মাইকিং করলেও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। বরং নতুন নতুন মাদক ব্যবসায়ীর আবির্ভাব ঘটেছে, যাদের মধ্যে নারীরাও রয়েছেন।
এলাকার তরুণ ও যুব সমাজের বড় একটি অংশ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। নেশার টাকা জোগাড়ে তারা চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেচপাম্প, অটোর ব্যাটারি, বাইসাইকেল, সোলার ব্যাটারি, গ্যাসের বোতল, পানির মোটর, ট্রান্সমিটার, গরু-ছাগল, এমনকি মসজিদের দানবাক্সের টাকা পর্যন্ত চুরি হচ্ছে।স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেক উঠতি বয়সী তরুণ নেশার টাকা না পেয়ে আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নিচ্ছে। অভিভাবকেরা গভীর দুশ্চিন্তায় আছেন; বহু চেষ্টা করেও অনেকে সন্তানকে সুপথে ফিরিয়ে আনতে পারছেন না।
সরেজমিনে জানা গেছে, সন্ধ্যা নামলেই কটিয়াদী পৌরসভার কামারখোনা, গোয়াতলা, বেথইর আনন্দবাজার, বাঘরাইট, পশ্চিমপাড়া, মুমুরদিয়া ইউনিয়নের লাংটিয়া, পিপুলিয়া, বাঘবেড়, জালালপুর ইউনিয়নসহ ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে মাদকের আড্ডা বসে। একাধিক কারবারি প্রকাশ্যে ব্যবসা চালালেও সাক্ষীর অভাবে তারা আইনের ফাঁক গলে মুক্তি পেয়ে ফের একই কাজে লিপ্ত হয়।চিহ্নিত কিছু ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীও এই সিন্ডিকেটে জড়িত থাকায় তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অনেক ভ্রাম্যমাণ নারী-পুরুষ প্রকাশ্যে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজাসহ মাদক বিক্রি করছে।
কটিয়াদী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেথইর গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কয়েকজন মুসল্লী জানান, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদকসেবী ও কারবারিরা এলাকায় ভিড় করে। মোটরসাইকেলে করে দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন। কিছু বাড়িতে মাদক সেবনের আড্ডা, কিছু বাড়ি থেকে বিক্রি। পুলিশ এলেও কারবারিদের লোকজন ফোনে সতর্ক করে দেয়, ফলে তারা গা ঢাকা দেয়। পরে আবার আগের মতোই ব্যবসা শুরু হয়।এলাকাবাসীর অভিযোগ, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করলেও তারা জেল থেকে বেরিয়ে ফের একই ব্যবসা শুরু করে। তাই জরুরি ভিত্তিতে কঠোর আইন প্রয়োগ ও মাদক সিন্ডিকেট ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।কটিয়াদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, “মাদকের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই। প্রতিদিন একাধিক দল নিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। মাদক কারবারি যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

