আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পিতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা, ফুফু সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার মতোই পরিণতি ভোগ করতে হলো থাইল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রাকে। একটি ফোনকলকে ঘিরে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।সম্প্রতি ফাঁস হয় তার একটি ফোনকল। একে ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ফোনকলে তিনি কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেন’কে ‘চাচা’ বলে সম্বোধন করেন এবং এক থাই সেনা কমান্ডারের সমালোচনা করেন। কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিষয়ক আলোচনায় ‘নমনীয়তা’ দেখানোর প্রস্তাব দেন। এই ফোনকল থাইল্যান্ডে জাতীয় মর্যাদা ও সামরিক কর্তৃত্বের অবমূল্যায়ন হিসেবে দেখা হয়েছে, যা জনমনে ক্ষোভ তৈরি করে। এর ফলে তার অব্যাহতির আবেদন আদালতে জমা পড়ে। ফলে ৭-২ ভোটে সাংবিধানিক আদালত তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেতংতার্নের পদত্যাগ কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য। এ সময় ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুনগ্রুনগ্রুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। শিনাওয়াত্রা পরিবারে এটি তৃতীয় ক্ষমতার পতন।
পেতংতার্ন হলেন থাকসিন শিনাওয়াত্রার কন্যা। ২০০৬ সালে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন থাকসিন। ইংলাক শিনাওয়াত্রার ভাতিজি পেতংতার্ন। ইংলাক ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অপসারিত হন। এখন তিনজনই থাই রাজনীতির সর্বোচ্চ পদে আসীন থেকে পূর্ণ মেয়াদ শেষ না করেই ক্ষমতা হারালেন। এর আগে মার্চে পেতংতার্নের জনপ্রিয়তা ছিল শতকরা ৩০.৯ ভাগ। জুনে তা নেমে এসেছে ৯.২ ভাগে। অর্থনীতি চাঙা করতে ব্যর্থতা, কোয়ালিশনের দুর্বলতা এবং সামরিক সমালোচনা- সব মিলিয়ে তিনি চাপের মুখে। তার পিতা থাকসিন শিনাওয়াত্রা বর্তমানে থাইল্যান্ডের সবচেয়ে আলোচিত বিচারপ্রার্থী। তিনি ৯ বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজপরিবার নিয়ে কথা বলায় এখন রাজকীয় আইনে অভিযুক্ত। এই আইন অনুযায়ী রাজপরিবারকে অসম্মান করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং শাস্তি হতে পারে ১৫ বছরের কারাদণ্ড।
সম্প্রতি থাকসিন দেশে ফেরেন। মনে করা হয়, তার আগে ২০২৩ সালে একটি গোপন রাজনৈতিক সমঝোতা করা হয়েছে তার বিষয়ে। তার ফলে সেনাবাহিনী ও রক্ষণশীল শিবিরের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছে পিউ থাই দল সরকার গঠন করে। এরই মধ্যে একটি রক্ষণশীল মিত্র দল জোট ত্যাগ করেছে। সামরিক ও রাজতন্ত্রঘেঁষা গোষ্ঠীগুলো সিনাওয়াত্রা পরিবারের ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী’ আচরণ নিয়ে সরব হয়েছে।