রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় এক পলিটেকনিক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। অভিযুক্তের গ্রেফতারের পরপরই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে, বাড়ে সহিংসতা, পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করা হয়।আটক হওয়া শিক্ষার্থীর নাম রঞ্জন রায় (২২)। তিনি রংপুর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (RIT)-এর কম্পিউটার বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর ছয়আনি গ্রামের বাসিন্দা সুজন কুমারের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, “রঞ্জন রায় এলআরএম” নামক একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ পোস্ট করা হচ্ছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর গঙ্গাচড়া মডেল থানার একটি বিশেষ দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে তাকে আটক করে।গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সন্ধ্যার দিকে পাশের এলাকা থেকে একদল লোক বেতগাড়ি গ্রামে ঢুকে স্লোগান দিতে দিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করে এবং ভুল করে অভিযুক্তের প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা চালায়। রাতেই সেনা ও পুলিশের উপস্থিতিতে তারা ছত্রভঙ্গ হলেও আতঙ্কে অনেক গ্রামবাসী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।
রবিবার দুপুরে আবারও একদল উত্তেজিত লোক হামলা চালিয়ে আরও চারটি বাড়িতে ভাঙচুর করে। এরপর সেনাবাহিনী দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এক গ্রামবাসী জানান, “হঠাৎ করেই লাঠিসোঁটা নিয়ে কিছু লোক হামলা চালায়। আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।”গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো পোস্টের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা ও পুলিশের যৌথ টহল অব্যাহত রয়েছে। গুজব রোধে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও আমরা সমন্বয় করে চলছি।”এলাকাবাসী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত কঠোর নজরদারি থাকবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।