রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের নগরবন্দ ডাঙ্গি এলাকায় প্রকাশ্যে দিনদুপুরে ফসলি জমির মধ্যে লোহার পাইপ বসিয়ে জমির ভূগর্ভ থেকে অবৈধভাবে শিলাবালু উত্তোলন করছে অবৈধ কারবারিরা। স্থানীয়ভাবে তৈরি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মেশিন ব্যবহার করে এই কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।স্থানীয়রা জানান , শোহায়াইব, আজহারুল, লাবলু ও রবিউল নামের চারজন অবৈধ বালু কারবারি অন্তত নয়টি লোহার পাইপ বসিয়ে এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)- এর বদলি হওয়ায়, অবৈধ বালু কারবারিরা যেন উল্লাসে মেতে উঠেছে। ক’দিন আগেও সহকারী কমিশনারের ভয়ে বালু কারবারিরা মেশিন যোগে বালু উত্তোলনের সাহস পয়নি। কিন্তু এখন তাদের মধ্যে প্রশাসনিক কোন ভীতি নেই।
স্থানীয় কাজল বলেন, হামরা মরছি, আবাদি জমি সব বালু তুলিয়া শেষ করি দেয় চোল।রহিম বলেন, দিনের আলোয় প্রকাশ্যেই এই কর্মকাণ্ড চলছে। ভূমি কর্মকর্তাদের কোন খোঁজ খবর নাই।বৃদ্ধ আবুল মিয়া বলছেন, মাহেন্দ্রাট্রলির খুব অত্যাচার শুরু হইছে, রাস্তা -ঘাট সব শ্যাস। কাঁচা রাস্তা সব নষ্ট হইছে, এ্যালা আর কাঁদোর জন্যে হাটা বন্ধ।
কৃষক মিজান বলেন, “মেশিনের বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে। জমির নিচে গর্ত হয়ে যাচ্ছে। আমার বাড়ির দেয়ালে ফাটল ধরেছে। কেউ বাঁধা দিলে তারা হুমকি দেয়।”জানা গেছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তবে প্রতিবারই তারা কোনো না কোনোভাবে পার পেয়ে যাওয়ায় এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের কাছে মামলা এখন ভয়ের কোন বিষয় নয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী বলেন, “এই উত্তোলনের কোনো বৈধ অনুমতি নেই আমরা খবর পেয়ে গেলে বালু কারবারিরা সেখান থেকে সরে পরে। চলে আসার পরে আবার শুরু করে । আমরা কর্মচারী আমাদের তো অভিযান দেয়ার ক্ষমতা নাই।
পরিবেশবিদ কমল কুমার বলেন, “এভাবে গভীর পাইপিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর মারাত্মকভাবে নিচে নেমে যেতে পারে। এতে মাটির গঠন দুর্বল হয়ে ভূমিধস, ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ে এবং আশপাশের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে।”প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তোলিত বালু প্রতিদিনই ট্রাকে করে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রশাসনের চোখের সামনে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চললেও জড়িতরা রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন,অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।