ভোরের খবর ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়া সরকার ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য ইউটিউব ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর আগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাটের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও ইউটিউব ছিল সেই তালিকার বাইরে। এবার সেটিও যুক্ত হলো দেশের সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনায়।প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এক ঘোষণায় বলেন, “আমি এবার সময়ের ডাক দিচ্ছি। অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের নিরাপত্তাই আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা অভিভাবকদের পাশে আছি।” তিনি আরও জানান, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং এসব প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।
এক সরকারি জরিপে দেখা গেছে, ১৬ বছরের নিচের ইউটিউব ব্যবহারকারীদের ৩৭ শতাংশ ক্ষতিকর কনটেন্টের সম্মুখীন হচ্ছে, যা অন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর তুলনায় বেশি। এই তথ্যের ভিত্তিতে দেশটির ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউটিউবকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার সুপারিশ করে।তবে ইউটিউব নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া নয় বরং একটি “ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম” হিসেবে দাবি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, এটি মূলত টেলিভিশনের বিকল্প এবং শিক্ষামূলক ও বিনোদনমূলক কনটেন্ট প্রদানের মাধ্যম।
তবুও সমালোচকরা বলছেন, ইউটিউবেও রয়েছে সেই একই ধরনের অ্যালগরিদম ও কনটেন্ট রিকমেন্ডেশন সিস্টেম, যা কিশোরদের দীর্ঘ সময় প্ল্যাটফর্মে আটকে রাখে এবং ক্ষতিকর কনটেন্টে নিয়ে যেতে পারে।নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১৬ বছরের নিচে কেউ নিজে ইউটিউব অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। তবে অভিভাবক বা শিক্ষকরা প্রয়োজনীয় ভিডিও প্রদর্শন করতে পারবেন। শিক্ষক সংগঠনগুলো সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, শিক্ষার উপযোগী কনটেন্ট বাছাই ও কিশোরদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও শিক্ষকদের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।
অন্যদিকে, গুগল মালিকানাধীন ইউটিউব এই সিদ্ধান্তকে আইনি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অতীতে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সঙ্গে গুগলের সংঘাতের নজির রয়েছে।দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রী অনিকা ওয়েলস বলেন, আমরা শিশুদের কল্যাণে কাজ করছি। আইনি ভয় দেখিয়ে আমাদের অবস্থান থেকে সরানো যাবে না।নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠান যদি কিশোরদের সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তবে তাদের সর্বোচ্চ ৪৯.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।সরকারের পক্ষ থেকে বর্তমানে বয়স যাচাই প্রযুক্তির কার্যকারিতা যাচাই করা হচ্ছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই চূড়ান্তভাবে আইন কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।