মোঃ পলাশ শেখ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: স্বভাবগতভাবেই মানুষ সুন্দরের পূজারি। ছেলেদের সৌন্দর্যের অনেকটাই বহন করে চুল-দাড়িতেই। তাই সৌন্দর্যবর্ধনে নরসুন্দর বা নাপিতদের কদর ও প্রয়োজনীয়তাও অনেক বেশি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে সিরাজগঞ্জে কাজিপুর উপজেলায় এই পেশা প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন আর চোখে পড়ে না হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জের ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিত সম্প্রদায়ের পিঁড়ি বা টুলে বসিয়ে চুল ও দাড়ি কাটার দৃশ্য।
কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন নরসুন্দর বা নাপিত পেশা বর্তমানে শহর-বন্দর ও গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে রয়েছে এসি ও নন-এসি সেলুন। সে সব সেলুন ও পার্লারে চুল-দাঁড়ি কাটার জন্য রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মেশিন। বর্তমানে পুরুষদের জন্যও ব্যবস্থা করা হয়েছে পার্লার।মাঝে মধ্যে বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে চোখে পড়ে ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিতদের কর্মযজ্ঞ। প্রতি সপ্তাহের হাটের দিনে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা নিম্ন আয়ের এবং বয়স্ক ক্রেতারাই এসব ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিতদের ‘সেবা গ্রহীতা’।
নাটুয়ারপাড়া হাট শনিবার এবং বুধবার সাপ্তাহিক দুই দিন। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে কিছু জায়গায় চোখে পড়ে ভ্রাম্যমান নরসুন্দর বা নাপিতরা কাস্টমারদের পিঁড়ি বা টুলে বসিয়ে চুল ও দাড়ি কাটছেন।
এক নাপিত বলেন, এই হাট সপ্তাহে দুইদিন বসি প্রতি বাজারেই এসে কাজ করি। ৩০-৩৫ বছর আগে চুল-দাড়ি কাটা ৫-১০ টাকা ছিল। টাকা এবং দাড়ি কাটতে ১৫-২০ টাকা নেই। তবে, এত কম দামে চুল দাড়ি কাটার মানুষ পাওয়া যায় কম। সারাদিনে ৬০০-৮০০টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালানো হয়।নাটুয়ারপাড়া হাটে চুল কাটতে আসা ৬০ বছর বয়সী এক ব্যাক্তি জানায়, ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে হাটে এসে এই ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর বা নাপিতদের কাছে চুল কাটাতেন। এখন তিনি নিজেই ও তার সন্তানের নাতিদের এনে চুল কাটাচ্ছেন।
আরেক ব্যাক্তি বলেন ,নিম্ন আয়ের মানুষ। সেলুনে চুলদাড়ি কাটাতে গেলে ৫০ থেকে ১০০ টাকা লাগে। আর এখানে মাত্র ৩০ থেকে ৫০ টাকায় চুল ও দাড়ি কাটানো যায়। সেলুন আর এদের কাজের মান প্রায় সমান।অপর ব্যক্তি বলেন, ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে বাজারে যেতাম। তিনি চুল কাটাতে তাদের দায়িত্ব দিয়ে বাবা বাজারের সব কাজ শেষে আসতেন। এখন আর তাদের কাছে চুল-দাঁড়ি কাটায় না।
