বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে রয়েছেন দুই পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের আমীরের দেয়া বিশেষ এয়ার এম্বুলেন্স ঢাকায় অবতরণ করে। আনুষ্ঠানিকতা সেরে এগারোটার কিছু পর খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথে পথে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে অপেক্ষা করছেন লাখো নেতাকর্মী।দলীয় চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়েছেন নেতারা।
প্রিয় নেত্রীকে দেখতে তারা অপেক্ষা করছেন। কারো হাতে খালেদা জিয়ার ছবি, কারো হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, জাতীয় এবং দলীয় পতাকা হাতেও এসেছেন কেউ কেউ। বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায় পৌঁছানোর পথে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় সামলাতে ট্রাফিক পুলিশও তৎপর রয়েছে। বিএনপি এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, নেতাকর্মীরা যাতে সড়কে অবস্থান না করে ফুটপাতে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান লন্ডন থেকে দেশে এলেন প্রায় ১৭ বছর পর। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশ্যমূলক মামলা ও হয়রানির কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারেননি। তার এই ফেরা নিয়েও স্বজন এবং দলীয় নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত।
গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত নয়টার পর লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়া ও জুবাইদা রহমানকে পৌঁছে দেন তারেক রহমান। মাকে বিদায় জানানোর সময় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় খালেদা জিয়াকে। তিনি সবার সঙ্গে শুভেচ্ছ বিনিময় করে বিমানে উঠেন। ওদিকে বিএনপি চেয়াপারসনের গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ প্রস্তুত করা হয়েছে। অন্যদিকে জুবাইদা রহমান ধানমন্ডিতে বাবার বাসা ‘মাহবুব ভবনে’ উঠবেন। তার জন্য নতুন করে বাসার আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে।
গত ৮ই জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে খালেদা জিয়াকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যান তার বড় ছেলে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৫শে জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাসা থেকেই লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে তিনি চিকিৎসা দেন। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে বার বার চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলেও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তাকে সেই অনুমতি দেয়া হয়নি।