ফরহাদ হোসাইন (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলাধীন কমলনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতার (প্রতিবন্ধী) পিতা নুরুল আমিন (৬০) কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একই পরিবারের আরও পাঁচজনকে গুরুতর আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। আহত সকলকে উদ্ধার করে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত নুরুল আমিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও আরো দুইজনকেও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। অপর দুইজনকে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহতরা হলেন, নিহত নুরুল আমিনের ছেলে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব বজলুর রহমান ভুলু (৩১), মো. মামুন (২৫), ফিরোজ (১৮) ও মেয়ে আছমা আক্তার (২২)।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা দিকে উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ভাইস চেয়ারম্যান সড়কের চৌধুরীর চা দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
আহত বজলুর রহমান ভুলু জানান, স্থানীয় চৌধুরীর চা দোকানের সামনে দীর্ঘদিন ধরে একটি মাচায় বসে ওই এলাকার মাদকাসক্ত কামাল, জামাল, মাসুদ, আলমগীর, মনির ও সেলিম সহ বিভিন্ন এলাকার অপরিচিত লোকজন গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা ও মাদকগ্রহনসহ অসামাজিক কাজে লিপ্ত রয়েছে। এ নিয়ে দুইদিন আগে বজলুর রহমান ভুলু ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অপরিচিতদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্তদের সাথে তাঁদের বাকবিতন্ডা হয়। এরই জের ধরে সোমবার রাতে চৌধুরীর চা দোকানে তার ভাই মামুন চা খেতে গেলে পাওনা টাকার অজুহাতে চা দোকানদার চৌধুরীর সাথে তার ভাই মামুনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সুযোগে অপরাপর সন্ত্রাসী কামাল, জামাল, মাসুদ, আলমগীর, মনির ও সেলিম পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মামুনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। খবর পেয়ে বজুলর রহমান ভুলু, তার পিতা নুরুল আমিন ও বোন আছমা আক্তার এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। এসময় ভুলুর পিতা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নুরুল আমিনকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে অভিযুক্তরা। বজলুর রহমান ভুলু আরও জানান, অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ, চুরি ডাকাতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়ে তার বাবাকে হত্যা করে এবং পরিবারের আরও চারজনকে আহত করেছে। এবিষয়ে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্তরা পলাতক ও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে সেলিম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ দিকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার পিতা ও বিএনপি কর্মী নুরুল আমিন হত্যার বিরুদ্ধে ও বিচারের দাবিতে তাৎক্ষণিক স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা তোরাবগঞ্জ বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন।