মো: শাকিল শেখ (সাভার ও ধামরাই) প্রতিনিধি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল) কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সাভারের আশুলিয়ার জোড়া শিশু সুমাইয়া ও খাদিজার মৃত্যুর অভিযোগে এবং বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতদ্বয়ের বাবা-মা।মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১ টায় আশুলিয়ার জিরানী বাজার সাংবাদিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতদ্বয়ের বাবা মো.সেলিম জানান, গত ১৯ অক্টোবর ২০২১ সালে সাভারের একটি ক্লিনিকে জোড়া লাগানো অবস্থায় দুটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে দীর্ঘদিন রাখা হয় তাদের। পরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে এক বছর এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮ মাস রেখে চিকিৎসা করানো হয়।
এদিকে, পিজি হাসপাতালে কুড়িগ্রামের জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাবার সফল অস্ত্রপচার হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে গত ৬ এপ্রিল ২০২৪ সালে তার বাচ্চাদেরও ওই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক ডা: একে এম জাহিদ হোসেনের অধীনে ভর্তি করেন। তার বাচ্চা দুইজনের কোমড়ের মাঝখানে ইনফেকশন ছিল যা ঔষুধে নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পরে দীর্ঘ ৮ মাস পরে কোমড়ের ইনফেকশন অপারেশন করা হয়। কিন্তু দেড়ি হওয়ায় তাদের দুইজনেরই ব্লাড ক্যান্সার হয়ে যায় এবং ৩১ মার্চ ২০২৫ সালে তারা দুইজনেই মৃত্যুবরণ করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হাসপাতালের এক অফিস আদেশে জোড়া লাগানো রোগীদ্বয় একাডেমিক ও গবেষণাভিত্তিক কেস হওয়ায় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে রোগীর কেবিন ভাড়া মওকুফ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ঔষধপত্র বিনামূল্যে প্রদানের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতা অভ্যূত্থানের পর বর্তমান ওই হাসপালের ভিসি শাহিনুল আলম এবং পরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন এই আদেশ মেনে নেয়নি। তাদের সাথে সঙ্গে দেখা করতে গেলে তারা বলেন ইন্ডিয়া থেকে শেখ হাসিনা কে ফিরিয়ে আনলে তাহলে নাকি ফ্রী চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে?পরে তাদের চিকিৎসা বাবদ প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করেও তাদের দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারেনি। হাসপাতালের ভিসি ও পরিচালকের অবহেলার কারণেই আজকে দুই সন্তানকে হারাতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তাই বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং হাসপালের ভিসি ও পরিচালকের শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণ দাবী করছি।সংবাদ সম্মেলনে এসময় নিহত শিশুদ্বয়ের মা সাথী আক্তার এবং সাভার ও আশুলিয়ায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।