পাবনা প্রতিনিধি: পাবনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছেন পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলের বছরগুলোতে নানা বিতর্ক থাকলেও এবার প্রকল্পের স্বচ্ছ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছেন পাবনা জেলা প্রশাসক।
জানা গেছে, পাবনা জেলা প্রশাসক পাবনার ৯টি উপজেলায় ৩৫টি প্রকল্পের মাধ্যম ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ করেছেন। প্রকল্প কর্মসূচি আওতায় ধর্মীয়, শিক্ষা, জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান মেরামত ও উন্নয়ন এবং জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা/ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং জনবহুল স্থানে জনসাধারণের জানমালসহ সার্বিক নিরাপত্তা এবং সরকারি সম্পদ রক্ষাসহ নানা প্রসংসনীয় কাজের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমরা আগের বছরগুলোতে দেখতাম এমপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা এসব প্রকল্পের টাকা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যয় করতো। কিন্তু এবারই প্রথমবারের মতো কোনো জেলা প্রশাসক নিজ উদ্যোগে অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছেন। এসব কাজের প্রমাণ যে কেউ দেখতে পারবেন। দিনের আলোর মতো স্বচ্ছ। তিনি ব্যতিক্রমী একজন জেলা প্রশাসক। রাতদিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন পাবনাবাসীর জন্য।
পাবনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ১শ বছরের রেকর্ড রুম। যেখানে মানুষের জমির কাগজপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসহ সংরক্ষণ থাকে। কিন্তু খুবই বাজে ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এর আগের কোনো জেলা প্রশাসক বা কোনো জনপ্রতিনিধি, এমপি এটা নিয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। কিন্তু এবার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের নিজ উদ্যোগে এই রেকর্ড রুম সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা পরিদর্শন করে ভূয়শী প্রশংসা করেন।
পাবনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বরকতউল্লাহ ফাহাদ বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের এমন কাজ নিয়ে অনেকেই ষড়যন্ত্র করছেন। যারা আগের বছরগুলোতে এসব প্রকল্পের টাকার ভাগবাটোয়ারা পেতেন তারা এবার না পেয়ে নানাভাবে বিতর্ক সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন। বিশেষ করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসেবে খ্যাত আওয়ামী লীগের সময় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন তারা এখন এইসব কাজ নানা মাধ্যমে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।
এবিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, চেষ্টা করেছি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ভাবে কাজ করতে। গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির বাস্তবায়ন নির্দেশিকা-২০২১ মেনে এইসব প্রকল্পের কাজগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। একটি প্রকল্পও নীতিমালার বাহিরে গ্রহণ করা হয়নি। কেউ যাতে এসব প্রকল্পের টাকা অনিয়ম করতে না পারে সেজন্য জবাবদিহিতা রাখার চেষ্টা করছি। আমরা চেষ্টা করছি মানুষ যাতে আমাদের কাজের সুফল পায়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় সারাদেশে আটটি বিভাগের সকল জেলার জন্য ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে অন্যান্য জেলার মতো পাবনা জেলার জন্যও বরাদ্দ ছিল ২০ লাখ টাকা। এসব প্রকল্পের টাকাও নিয়ম মেনে অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে নীতিমালার আলোকে গ্রহণ করা হয়েছে।