অনেক মুসলিম খেলোয়াড়কেই রোজা রেখে খেলতে দেখা যায় প্রতি রমজানেই। এবারও ব্যাতিক্রম নয়। ক’দিন আগেই চ্যাম্পিয়নস লীগে রোজা রেখে বেনফিকার বিপক্ষে খেলতে নামেন লামিন ইয়ামাল। সেদিন প্রথম গোলে অ্যাসিস্ট করে পরের গোলটা করেন নিজেই। এবার একই চিত্র দেখা যাবে আন্তর্জাতিক বিরতিতেও। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কার সূত্রমতে, স্পেনের হয়ে প্রথম ফুটবলার হিসেবে রোজা রেখে খেলতে যাচ্ছেন তরুণ তুর্কি ইয়ামাল।
উয়েফা ন্যাশনস লীগের দুই ম্যাচকে সামনে রেখে জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। সতীর্থদের সঙ্গে সেরেছেন অনুশীলনও। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের মাঠে খেলবে স্প্যানিশরা। ফিরতি লেগ আগামী রোববার ঘরের মাঠে। এর আগে বেনফিকার বিপক্ষে ম্যাচের ১৫তম মিনিটে রোজা ভাঙেন ইয়ামাল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ায় কুড়িয়েছেন প্রশংসাও।
জন্মসূত্রে স্প্যানিশ হলেও ইয়ামালের বাবা মুনির নাসরাউয়ি একজন মরোক্কান মুসলিম। মার্কা তাদের প্রতিবেদনে লেখে, নিজের পৈতৃক পরিবারের সম্মানে মুসলিমদের সিয়াম সাধনার পবিত্র মাসে রোজা রেখেই খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গত বছরও মার্চের মাঝামাঝি সময়ে রমজান চলাকালীন স্পেনের হয়ে দু’টি ম্যাচ খেলেন ইয়ামাল। তবে সেবার রোজা রাখা হয়নি তার। এবার তিনি মনে করছেন যে রোজা রেখে খেলতে পারবেন। রোজা রেখেই খেলতে খুব একটা সমস্যা হয়না বার্সা ফরোয়ার্ডের। এ প্রসঙ্গে ডিএজেএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইয়ামাল বলেন, ‘মনেই হবে না যে আপনি ক্ষুধার্ত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শরীরকে পানিশূন্য না রাখা। ক্লাবে (বার্সেলোনা) আমি এ বিষয়ে খুব সতর্ক ছিলাম। (ফজরের) নামাজ পড়ার জন্য আমি ভোর ৫টায় উঠি। এরপর ইলেক্ট্রোলাইট জাতীয় পানি পান করি, যা সারাদিন আপনার শরীরকে পানিপূর্ণ রাখবে। খাওয়ার সময় (ইফতার) হলে আমি চিনি না খাওয়ার চেষ্টা করি। এর পরিবর্তে প্রচুর পানি পান করি। তাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণে থাকে।’ ইয়ামালের আগেও বেশ কয়েকজন মুসলিম ফুটবলারকে রোজা রেখেই মাঠে দৌড়াতে দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। তাদের মধ্যে অন্যতম করিম বেঞ্জেমা, সাদিও মানে, মোহাম্মদ সালাহ, আশ্রাফ হাকিমি ও এনগোলো কান্তে। ২০২১-এর ইউরোপা লীগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মুখোমুখি হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও এএস রোমা। রেড ডেভিলদের ৬-২ গোলে জেতা ম্যাচে রোজা রেখে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স করেন পল পগবা। সেদিন হেডে একটি গোলও করেন এই ফরাসি মিডফিল্ডার।
লামিন ইয়ামাল রোজা রেখে খেলতে যাওয়া প্রথম স্প্যানিশ হলেও, স্পেন দলের প্রথম মুসলিম খেলোয়াড় নন। এর আগে খেলেছেন আদামা ত্রাওরে, আনসু ফাতি, মুনির এল হাদ্দাদিরাও। তবে রমজান মাসে স্প্যানিশদের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি ত্রাওরে ও ফাতি। অন্যদিকে স্পেনের হয়ে ২০১৪র সেপ্টেম্বরে একটি ম্যাচই খেলেন মুনির। সে সময় রমজান মাস চলছিল না।