মো: শাকিল শেখ (সাভার ও ধামরাই) প্রতিনিধি: ঢাকার সাভারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওটিবয়ের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সেবিকা সরকার নামে এক নার্সকে আটক করেছে। তবে এর আগেই পুলিশ আসার খবর পেয়ে হাসপাতালটিতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় হাসপাতালটির মালিক মফিজুর রহমান, ওটিবয় রিপন, নার্স ও স্টাফরা।
শনিবার(২৯ মার্চ) সকালে সাভারের তালবাগ এলাকায় অবস্থিত সিটি ল্যাব হাসপাতালে এ রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মো. হাফিজুর রহমান (৩৬)। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায় এবং সে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আশুলিয়ার বাংলাবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় শারমিন গ্রুপে অপারেটর হিসেবে কাজ করতো।
নিহতের স্ত্রী মালা বেগম অভিযোগ করেন, শনিবার রাতে তার স্বামী মানিকগঞ্জ থেকে আশুলিয়া আসার পথে বাইশমাইল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। এসময় তার হাত ভেঙে গেলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের তালবাগ এলাকার সিটি ল্যাব হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে থাকায় অবস্থায় তার পেট ব্যথা উঠলে সেখানকার নার্সরা তাকে পেট ব্যথার জন্য বেশ কয়েকটি ইনজেকশন পুশ করলে রাতেই সে মারা যায়। এদিকে ঘটনায় পর পর হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্তৃপক্ষরা নিহতের স্বজনদেরকে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ভয়-ভীতি দেখিয়ে পালিয়ে যায়।
আটক নার্স সেবিকা সরকার বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে রোগী আসে কিন্তু তখন জরুরি বিভাগে মেডিকেল অফিসার ছিল না। ওটিবয় রিপন ওই রোগীকে ভর্তি দিয়ে তাকে চিকিৎসা দেন। আমরা তার অর্ডার অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ার পর রাতে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়। বিষয়টি রিপনকে জানালে তার আসতে দেরী হওয়ায় রোগী মারা যায়। এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিক, ওটিবয় রিপনসহ অন্যান্য নার্সরা পালিয়ে যায়। আমি আর খালা হাসপাতালে ছিলাম, পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে আসছে।’
এবিষয়ে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সেবিকা সরকার নামের একজন নার্সকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া নিহতের লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এব্যাপারে সাভার প্রাইভেট হাসপাতাল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়াকিলুর রহমান বলেন, সিটিল্যাব হাসপাতাল আমাদের সদস্য নয়। আমার জানা মতে তাদের বৈধ অনুমোদন নাই। মেডিক্যাল অফিসার ছাড়াই তারা নার্স এবং ওয়ার্ডবয় দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কারনেই রোগী মারা যায়। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যাতে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো অলিতে গলিয়ে গজিয়ে ওঠা অনুমোদনহীন হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়, আমরা প্রয়োজনে তাদের সহযোগীতা করবো।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল আল হাসানের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এছাড়া হাসপাতালটির মালিক মফিজুর রহমানের মোবাইলে কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা জেলার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, নিহতের মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
মো: শাকিল শেখ
সাভার(ঢাকা)।
০১৯৪৭৩৫৩৬২৭
২৯.০৩.২৫
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭