নিজস্ব প্রতিনিধি: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেছেন, দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরাই শহীদ জিয়াকে হত্যা করেছেন, তারা মনে করেছে জিয়াকে হত্যার মাধ্যমে বিএনপিকে নিঃশেষ করে দিবে, তারা ভেবেছেন বিএনপি না থাকলে তাদের অশুভ মনোবাঞ্চনা পুরণ করতে পারবে, এই দেশকে অন্য দেশের করদ রাজ্যে পরিণত করতে পারবে। কিন্তু তাদের সে ভাবনা মিথ্যা প্রমানিত করে বিএনপি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছেন, নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে রনাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। অপর পক্ষে কিছু রাজনৈতিক দল সে সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, এমনকি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। এখানে বিএনপির সাথে অন্যদের পার্থক্য, বিএনপির রাজনীতি আয়নার মতো স্বচ্ছ। অন্যদের ঐতিহাসিক দায় রয়েছে – যা বিএনপির নেই।রফিকুল আলম মজনু আজ চকবাজার থানা বিএনপির কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগে ইতিহাসের দায় মোচন করুন – তারপর মানুষের কাছে যান, রাজনীতি করুন।
মজনু বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিএনপির আন্দোলনমুখী নেতাকর্মীদের দমন করার জন্য গুম খুন করেছে। গত দেড় যুগে নাসির উদ্দীন আহমেদ পিন্টুর মতো ত্যাগী নেতাদেরও জেল খানায় বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে।
মজনু অভিযোগ করেন, ১/১১ এর অপশক্তি আজ আবার লেবাস পাল্টে নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাই আমাদের সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থেকে এদের প্রতিহত এবং প্রতিরোধ করতে হবে। ছাত্রজনতার জীবন, রক্ত বৃথা যেতে পারেনা, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। তিনি আন্দোলনে শহীদদের পরিবার এবং যারা আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে তাদের পাশে দাড়ানোর জন্য রাষ্ট্র, সরকারসহ সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতি আহবান জানান।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, সোমবার, বিকালে, চকবাজার থানা বিএনপির এই কর্মশালাটি বকশীবাজারস্থ আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু’র সভাপতিত্বে কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
কর্মশালায় ৩১ দফা সংস্কার কর্মসুচী উপস্থাপন করেন বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। ৩১ দফা কর্মসূচীর বিশ্লেষণ এবং আলোচনা করেন বিএনপি সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম রাসেল, নাসিমা আকতার কল্পনা, হামিদুর রহমান হামিদ, বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন খোকন প্রমুখ। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহবায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, আ.ন.ম. সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, কে সিকান্দার কাদির, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, মীর হোসেন মীরু, সাইদুর রহমান মিন্টু, ফরহাদ হোসেন, মজিবুর রহমান মজু, বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম বাবুল। দক্ষিণ শ্রমিকদলের সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, দক্ষিণ মহিলাদলের সভানেত্রী রুমা আকতার, সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর নার্গিস প্রমুখ।
নগর সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেছেন, যারা ফ্যাসিবাদের উচ্ছিষ্টভোগী ছিলো, তেমন রাজনৈতিক ও ব্যাবসায়ীসহ প্রশাসনিক কর্তাদের এখনো কেন লালন পালন করা হচ্ছে এটা বোধ্যগম্য নয়। তিনি অবিলম্বে এদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগন এদেরকে দাতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য তৈরি আছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের যারা আশ্রয় প্রশয় দিবেন তাদেরকেও প্রতিহত করতে হবে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, জনগনের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে এমন সংস্কার চাই, কিন্তু কোন গোষ্ঠী বা ব্যক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের সংস্কার জনগনের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার যে সকল বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, আমাদের নেতা তারেক রহমান ইতিমধ্যে ৩১ দফায় তা বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন।
ইশরাক বলেন, একটি দল নিজেদের দূর্বলতা এবং আসন্ন ভরাডুবি টের পেয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টায় লিপ্ত। একারনে তারা নানা ধরনের অযৌক্তিক এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয় সামনে নিয়ে আসছে।
ইশরাক প্রশ্ন রাখেন, যে মহিলা নিজ দেশের ছাত্রজনতাকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলে তার এবং তার দলের কি এদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকে? তাকে কি রাজনীতি করতে দেয়া উচিত?