স্বপন রবি দাশ (হবিগঞ্জ) জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে সদর ইউনিয়নের হালিতলা সদস্য মোঃ মছদ্দর আলী সনদপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধা মছদ্দর আলী সমরযোদ্ধা হলেও মেলেনি স্বীকৃতি। ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন। যুদ্ধে গ্রেনেড বিস্ফোরনে কানে সমস্যা দেখা দেয়। বতমানে কানের সমস্যা মারাত্বক আকার ধারন করেছে। এখন আর কানে একেবারেই শুনেন না। মেশিন লাগালেও কাজ করেনা। ৮৫ বছর বয়স্ক মছদ্দর আলী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হযে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।মুক্তিযোদ্দা মছদ্দর আলী হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্টাকালীন সদস্য ছাড়াও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দাযিত্ব পালন করেন। বতমানেও তিনি নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।জানা যায়, ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা-সিলেট মহা সড়কের শেরপুর পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হন মছদ্দর আলী। যুদ্ধ চলাকালে তিনি ৫নং সেক্টরে নিয়োজিত থেকে যুদ্ধ করেন তিনি। ওই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মীর শওকত আলী ও মেজর অলি আহমেদ। ডেপুটি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন দ্বীন মুহাম্মদ ৫নং সাব সেক্টর টেকের ঘাট।তিনির প্রকৃত সহযোদ্ধাদের নাম লাল মুক্তিবার্তা এবং ভারতীয় তালিকায় রয়েছে। মছদ্দর আলীর সহযোদ্ধা শ্যামা প্রসন্ন দাশ গুপ্ত (বিধুবাবু), শাহ ফজর আলী, জালাল উদ্দীন সিদ্ধিকি ও তাজ উদ্দিন আহমদ স্বীকৃতি পেলেও তার স্বপ্ন অধরাই রয়েছে। তদবির আর তোষামুদি করতে না পারাকেও অন্যতম কারন হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী অভাবের তাড়নায় ১৯৮০ সালে ইরানে গমন করেছিলেন। তিনি ইরান ও আজার ভাইজানে দীর্ঘ ৩০ বছর পর্যন্ত কাটিয়েছেন। এ জন্যই তিনি মুক্তিযুদ্ধের তালিকা থেকে বঞ্চিত হন। ২০০৯ সালে দেশে গমন করেন। মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আওয়ামি লীগ জামানায় ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী লিখিত আবেদন করেছিলেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা ও কানে না শুনার কারনে মানিত সাক্ষীদের নিয়ে সরজমিনে উপস্থিত করাতে পারেননি। পরবর্তীতে তিনি আপিল করেছিলেন। আপিল গ্রহণ করা হলেও তাকে আজ অবদি কোন কিছুই জানানো হয়নি।মোঃ মছদ্দর আলী আনসার প্রশিক্ষক ও নবীগঞ্জ থানা কমান্ডার হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তার বয়স ৮৫ বছর। বর্তমানে তিনি শয্যাগত অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।এ নিয়ে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোঃ সেলিম তালুকদার বলেন, দেশে অনেকেই ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা গ্রহণ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারী চাকুরী ও সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছেন। প্রকৃত সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধ সক্রিয় অংশ নিয়েও মছদ্দর আলীকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি।তাকে দ্রুত প্রাপ্য স্বীকৃতি দিতে সংম্লিষ্টদের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।