নুরে আলম হাওলাদার: রাত ০২টা, বিয়ে বাড়িতে ডেকসেটে উচ্চ শব্দে বাজছিলো গান। এতে আশপাশের বাসিন্দাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এগিয়ে যান স্থানীয় এক আলেম। অনুরোধ করেন আস্তে গান বাজানোর জন্য। কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গানের সাউন্ড আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন ওই আলেম। এটাই কাল হয় তার জন্য। পরদিন ওই আলেমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর এবং তাকে সহ তার বাবাকে পিটিয়ে আহত করা হয়।শনিবার সকালে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পাঁচগাও এলাকায় এ হামলার এঘটনা ঘটে। হামলার শিকার মাওলানা হেলাল উদ্দিন পাঁচগাও গ্রামের আমির হোসেন দেওয়ান এর ছেলে এবং ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নড়িয়া থানা শাখার পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সম্পাদক।এ ঘটনায় হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের কথা উল্লেখ করে মাওলানা হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে পাচগাও গ্রামের চুন্নু খান (৫৫) এবং তার দুই ছেলে বাছেত খান (৩৫) ও স্বপন খানকে (২২) আসামী করে নড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপরদিকে চুন্নু খান নিজের মেয়ের বিয়ের বিষয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করে সম্মানহানীর অভিযোগ তুলে একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন।জানাযায় অভিযুক্ত চুন্নু খানের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে শুক্রবার রাতভর তার বাড়িতে উচ্চ শব্দে ডেকসেটে গান বাজাচ্ছিলেন। এতে আশপাশের বাসিন্দাদের সমস্যা হচ্ছিলো। রাত ০২টার সময় মাওলানা হেলাল উদ্দিন তাদের বাড়িতে গিয়ে আস্তে গান বাজানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু এতে চুন্নুখানের ছেলে বাছেত খান ও স্বপন খান ক্ষীপ্ত হয়ে হেলাল উদ্দিনের সাথে তর্কে জড়ান এবং গানের সাউন্ড আরও বাড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন তার ফেইসবুকে একটি পোস্ট করেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হন তারা। পরদিন সকাল ০৯টার দিকে চুন্নু খান, বাছেত খান ও স্বপন খান সহ অজ্ঞাত আরও ৫-৭জন ব্যক্তি মাওলানা হেলাল উদ্দিন এর বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর চালায় এবং তাকে সহ তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।এবিষয়ে মাওলানা হেলাল উদ্দিন বলেন ‘চুন্নু খানের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে রাতভর উচ্চ শব্দে গান বাজাচ্ছিলেন। আশপাশের সবার ঘুমের সমস্যা হওয়ায় রাত ০২টার দিতে আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে গান আস্তে বাজানোর অনুরোধ করি। কিন্তু পরবর্তীতে তারা আর জোরে গান বাজাচ্ছিলেন। আমি এ বিষয়ে ফেইসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করি। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সকালে আমাদের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেন এবং আমাকে সহ আমার বাবাকে বেধড়ক মারধর করেন। আমি এঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’এবিষয়ে অভিযুক্ত চুন্নু খান বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ে নিয়ে ফেইসবুকে ভিডিও দেওয়ায় আমার সম্মানহানী হয়েছে তাই আমি থানায় অভিযোগ করেছি। তবে তাদের বাড়িতে কারা হামলা করেছে তা আমার জানা নেই।’নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’