নিজস্ব প্রতিনিধি: যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়মূলক ও দাতব্য সংস্থা ভলান্টিয়ারি সার্ভিস ওভারসিজের (ভিএসও বাংলাদেশ) ২০২৪ সালের সেরা ভলান্টিয়ারি পুরস্কার পেয়েছেন পাবনার মেহেরাব হোসেন । মেহেরাব দীর্ঘ নয় বছর ধরে তার প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন এর মাধ্যমে মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন।আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ভলান্টিয়ার দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার দেওয়া হয়। এতে সারা দেশ থেকে সেরা ২০ জন ভলান্টিয়ারকে বেস্ট ভলান্টিয়ার হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। ভিএসও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিরুল হাসান কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।এছাড়াও অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুবাবা খন্দকার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকদ্দেম হোসাইন, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন রোলান্ড ফরবেস ইউএনএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর মাসাকি ওয়াটাবে, সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেস ব্যাকস্ট্রোম, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ক ডিরেক্টর এলেনা জে ট্যান্সি ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত মি. এন্ড্রে কারস্টেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।২০১৬ সালের মার্চ মাসে পাবনার বেড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিপিন বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মেহেরাব হোসেন তার পাঁচ জন বন্ধুকে নিয়ে “শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন ” এর যাত্রা শুরু করেন।সে সহ তার পাঁচজন বন্ধু সিদ্ধান্ত নেয়, টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে তা মানবকল্যাণের কাজে লাগাবে। তারা পাচ জন প্রোগ্রামের আগে তাদের ক্লাস মেট শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫-১০ টাকা করে তুলতো প্রোগ্রামের জন্য এই ভাবেই তারা সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যায়।মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে তারা সংগঠনের প্রথম প্রোগ্রাম করেন। মেহেরাব ১০০,তার বোন ১০০ আর তার ক্লাসের সকল বন্ধুরা মিলে ৩০০ টাকা দেয়। তারা এই ৫০০ টাকা ১০ জন গরীব অসহায় মানুষদের ময়দা,সেমাই কিনে দিয়ে শুরু করে সংগঠনের কার্যক্রম ।মেহেরাবের নেতৃত্বে এই সংগঠন ২ টা ভ্রাম্যমাণ পরিচালনা, এতিমখানা পরিচালনা সহ ২ টাকায় আমেজ প্রোজেক্টের মাধ্যমে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষকে আমাদের সংগঠন থেকে ত্রাণ দেয়।এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গ মানুষদের জন্য বিভিন্ন সময় খাবারের আয়োজন করে। তারা বিভিন্ন সময় কিছু প্রজেক্ট চালু করেছে এবং এই প্রজেক্টের মাধ্যমে তারা সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।অসহায়ের জন্য কাজ করে তার পারিশ্রমিক হিসেবে সেই মানুষগুলোর তৃপ্ত হাসি প্রতিষ্ঠাতা মেহেরাব হোসেন জিম এর সবচেয়ে বড় শক্তি এবং প্রাপ্তি। তিনি বলেন, পড়াশুনায় তো আমরা ২৪ ঘন্টা সময় ব্যয় করি না। অপচয় হয় অনেক মুল্যবান সময়। এই সময় টা অপচয় না করে সমাজ বিনির্মানে দিলে তাতে ব্যাক্তি, পরিবার তথা পুরো দেশের জন্যই মঙ্গলের হয়।ইচ্ছা শক্তিই জগৎ কে পরিচালনা করে থাকে।আমদের সবার মনে ইচ্ছা জাগা উচিৎ আমরা আর কাউকে না খেয়ে থাকতে দিবো না।”মেহেরাব হোসেনের পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের স্বীকৃতি পেতে সবারই ভালো লাগে আমিও তার ব্যতিক্রম নই।দীর্ঘ নয় বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি অসহায় মানুষের জন্য। আমি আমার এই অ্যাওয়ার্ডটি আমার দাদুকে উৎসর্গ করলাম।আমার দাদু বেঁচে থাকলে আমার থেকেও সে বেশি খুশি হতো।