স্বপন রবি দাশ (হবিগঞ্জ) জেলা প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পুরানগাঁও গ্রামে গলা কেটে মোস্তাকিন নামে এক কিশোরকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের মূল রহস্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। অন্যদিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত মোস্তাকিনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।স্থানীয়রা জানান- উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের মৃত জফর মিয়ার ৫ ছেলে । এদেরমধ্যে নিহত মোস্তাকিনের ১ম বড় ভাই ফজলু মিয়া দুবাই প্রবাসী,২য় ভাই সজলু মিয়া ওমান প্রবাসী, ৩য় ভাই সজল মিয়া সিলেটে ব্রিকফিল্ডে কাজ করে, চতুর্থ নিহত মোস্তাকিন ও সবার ছোট তামিম।মোস্তাকিন তার মা ফুলবানু বিবি, ছোট ভাই তামিম, প্রবাসী ভাই ফজলু মিয়ার স্ত্রী রোজিনা বেগম, সজলু মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করে আসছিলো।গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোস্তাকিনের নানী অসুস্থ হওয়ার খবর আসলে বসত ঘরে প্রবাসী দুই ছেলের দুই স্ত্রী রোজিনা বেগম, তাছলিমা বেগম ও ছেলে মোস্তাকিম মিয়া ও তামিমকে রেখে মোস্তাকিনের মা ফুলবানু বিবি পিত্রালয়ে তিমিরপুর গ্রামে চলে যান।মোস্তাকিনের ভাবী তাছলিমা বেগম জানান- প্রতিদিনের ন্যায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজ বসতঘরের খাটে মোস্তাকিন মিয়া ঘুমিয়ে পড়েন। ঘরের এক রুমে তাছলিমা বেগম ও অন্যরুমে ফজলু মিয়ার স্ত্রী রোজিনা তামিমকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে মোস্তাকিনের রুমের দরজার বিকট আকারে শব্দ শোনে মোস্তাকিনকে ডাকাডাকি করে তাছলিমা। এসময় মোস্তাকিনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ফজলুর স্ত্রী রোজিনাকে ডেকে একপর্যায়ে দুজন পৃথক রুম থেকে বের হয়ে ঘরের প্রধান ফটকে তালাবদ্ধ দেখতে পায়। একপর্যায়ে তারা চিৎকার-চেঁচামেচী করলে আশপাশের স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে মোস্তাকিনের গলাকাটা লাশ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেনসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মোস্তাকিন মিয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।এ ঘটনায় সোমবার নিহত মোস্তাকিনের মা ফুলবানু বিবি বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায়- ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে বলে বাদী দাবী করলেও এলাকায় রয়েছে নানা গুঞ্জন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের ভাষ্যমতে হত্যাকাণ্ডে আসামীদের পাশাপাশি নিহত মোস্তাকিনের ভাইয়ের স্ত্রী তাছলিমা বেগমের দিকেও অভিযোগের তীর যাচ্ছে। তাছলিমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটিত হবে বলে ধারণা স্থানীয়দের। অন্যদিকে সোমবার বাদ আছর মোস্তাকিনের জানাযার নামাজ শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।এদিকে রাতে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ বদরুলের নেতৃত্বে ক্রাইমসিনের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে নিহতের দুই ভাবীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে।নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭