বগুড়া প্রতিনিধি: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এখন রীতিমতো অনুপ্রেরণার নতুন একটি নাম এস এ জাহিদ। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় জন্ম নিলেও বেড়ে ওঠা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য বসবাস এখন বগুড়ায়। পিতা নুরুজ্জামান সরকার, পেশায় একজন শিক্ষক। মাতা সুলতানা রাজিয়া। তাদের পরিবারে ছিলনা স্বচ্ছলতা।২০০৭ সাল থেকে পড়াশুনার পাশাপাশি এক মুহূর্ত বসে থাকেননি জাহিদ। ঝাঁপিয়ে পড়েন চাকরীর উদ্দেশ্যে। ৫০০ টাকা বেতনে শুরু করেন পার্টটাইম জব। যা দিয়ে তার ব্যয় নির্বাহ কষ্টসাধ্য ছিল।বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর এবং মাস্টার্স শেষ করে বেকারত্বের কষাঘাতে কঠিন বাস্তবতার মুখোমূখি হয়ে দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা ছাড়াই অল্প কিছু পুঁজি নিয়ে ২০১৭ সালে শুরু করেন মৎস্য চাষ;প্রথমে ২টি পুকুরে মাছ চাষ করে প্রত্যাশিত লাভ না পাওয়ায় বগুড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হতে ১ মাস মেয়াদী মৎস্য চাষ প্রশিক্ষণ শেষ করে উন্নত পদ্ধতিতে নতুন ভাবে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি। তারপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।বগুড়ার লাল মরিচ ও সরিষার তেলের দেশব্যাপি ব্যাপক চাহিদা জানার পর সুযোগটি হাতছাড়াও করেননি জাহিদ। ১২ শতক জায়গায় গড়ে তুলছেন তেল এবং মসলার কারখানা। শুরু করেছেন intacagro.com.bd নামে একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। ওয়েবের পাশাপাশি ইনটেক এগ্রো নামে একটি মোবাইল অ্যাপস তৈরি করেছেন যার মাধ্যমে এখন সমগ্র দেশে সুনামের সাথে হোম ডেলিভারি সেবাও প্রদান করে যাচ্ছেন।রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য রাজনীতিকে ভীষণভাবে পছন্দ করার কারনে যোগ দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)—তে। বর্তমানে তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সহকারি সদস্য সচিব ও বগুড়া জেলা শাখার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।২০২৪ সালের ১ নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক সফল আত্মকর্মী ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।কিভাবে এত দ্রুত সফল আত্মকর্মী হয়ে উঠলেন—এ বিষয়ে জাহিদ বলেন, আমার ব্যবসার শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। ২-৩ জন পার্টনার নিয়ে শুরু করলেও তারা আস্তে আস্তে সবাই চলে যায়। শত বাধা আর প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি দমে যাইনি, নিরাশ হইনি। যেখানে আমি বেকারত্ব নিয়ে দিশাহারা ছিলাম, সেখানে আমার প্রতিষ্ঠানে এখন স্থায়ী কর্মী ৪০ জন।অস্থায়ীভাবে কাজ করছে আরো ৩০ থেকে ৩৫ জন। আমার স্বপ্ন আমি ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০০ জন বেকার যুবক ও যুব-নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবো ইনশাআল্লাহ।তিনি বলেন, ২০১৭ সালে যখন শুরু করেছিলাম, তখন আমি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে মৎস্য চাষের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তখন থেকেই আমার পাশে ছিলেন আমার শিক্ষক বাবা, মা, বড় বোন, বড় ভাই-যারা আমাকে স্নেহ ও উৎসাহ দিয়ে সব সময় এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। তাদের এই প্রেরণা এবং সমর্থন ছাড়া আমি কখনো এতোদূরে আসতে পারতাম না।যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জাহিদ বলেন, তাদের মূল্যবান পরামর্শ, দিকনির্দেশনা এবং অনুপ্রেরণায় আমার প্রতিটি পদক্ষেপ আজ এতো সহজ হয়েছে।আপনাদের কাছে আমি চিরঋণী।সফল আত্মকর্মী জাহিদ আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, আমি কথা দিচ্ছি ভবিষ্যতে আরও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে দেশ এবং সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭