শহীদূল ইসলাম শহীদ,সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙ্গণে ৫ শতাধিক পরিবারের ফসলি জমি,রাস্তাঘাট,বাড়িঘর,বসতভিটা রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে ইউনিয়নের লক্ষিয়াপাড়া,পারা সাদুয়া,বোয়ালীর চরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।
স্থানীয়রা নদী ভাঙ্গড় ও বন্যা থেকে রক্ষা পেতে স্থায়ী সমাধানকল্পে স্থানীয়রা নদীভাঙ্গন ও বন্যা থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় বাস্তুচ্যুত পরিবার গুলোর দাবি পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বসত ব্রিটানির মানে সার্বিক সহযোগিতার। আর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় পরিবারগুলোর লোকজন ঘরবাড়ি গুটিয়ে নিয়ে কেউ অন্য কোন চরে রাস্তার ধারে গৃহপালিত পাখি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে কেউ বা তাবু টাঙ্গিয়ে কেউ বা কুটি ঘরে আশ্রম নিয়ে অনাহারে -অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। কিছু কিছু পরিবারের নারী-শিশু, বয়োবৃদ্ধ সদস্য ও গৃহ-পালিত পশু-পাখি আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রেখে অধিকাংশ সদস্যই রয়েছেন চরম দুর্ভোগে।নদীর তীব্র ভাঙ্গন কালে ঘর বাড়ি সরিয়ে নিতে না পারায় বাস্তুভিটার সঙ্গে বসত ঘর ও ঘরে থাকা আসবাবপত্র, হাঁড়ি পাতিলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রক্ষা করতে না পারায় নদীতে ভেসে গেলেও কেউ কেউ আজও এক বস্ত্রই রয়েছেন।এসব দুর্গত পরিবারের পক্ষে অনেকেই দাবি করে বলেন, তিস্তা নদীর বুকে বেশ কিছু চর ভেসে উঠেছে। ঐ চর গুলোর কারণে পানির স্রোতধারা প্রবাহিত হচ্ছে তাদের বাস্তভিটার দিক দিয়ে। ফলে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে তাদের বসতভিটা, আবাদি জমি, রাস্তা-ঘাট। পানির স্রোতধারায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নদী বুকে জেগে ওঠা চর গুলো থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে কিছু বালু তুলে অন্ততঃ গুটিয়ে রাখা ঘরগুলো দাড় করিয়ে কোনমতে বসবাসযোগ্য করতে চান। এজন্য তারা দাবিও তুলে ধরেন।অন্যথায় মাটিতেই পড়ে থাকবে তাদের কষ্টার্জিত অর্থে তৈরি এসব ঘর-দরজা গুলো। ঝড়-বৃষ্টিতেও তাদেরকে ঘুমাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ মোজহারুল ইসলাম বলেন, হরিপুর ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। নদী ভাঙ্গন,বন্যা কবলিত এ ইউনিয়নের মানুষ-জন মানবেতর জীবনযাপন করেন। অধিকাংশ মানুষেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শ্রমের বিনিময়ে নানা ধরণের কাজ করে টাকা উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের পক্ষে বন্যা ও নদী ভাঙ্গণের মোকাবিলা করাটা অসহনীয়। বন্যা ও নদীভাঙ্গন কবলিত পরিবার গুলোর জন্য এ পর্যন্ত ৪ বারে ১২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু,চাহিদা অনেক বেশি । বে-সরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জিইউকে দুর্গত মানুষদের পাশে দাড়িয়েছে। জিইউক এসব মানুষের জন্য যা করেছে প্রশংসনীয়।
তিনি আরো বলেন,নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোর কবলিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের নিকট সেই তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়ছে। নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে নদী ভাঙ্গনে বাস্তুতু পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক হবে। এসব পরিবারের লোকজন বর্তমানে মানবতার জীবনযাপন করছেন। তাদের বাড়িঘর নির্মাণে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি প্রয়োজন। যেসব পরিবার তাদের বসবাসের ঘরের টিনের চালগুলো রক্ষা করতে পেরে বিভিন্ন চরে, রাস্তার ধারে, বা অন্য কোন স্থানে মাটিতে ফেলে রেখেছেন। তাদের সাময়িকভাবে হলেও ঘরগুলো দাড় করিয়ে বসবাস করতে কিছু মাটির প্রয়োজন। কোনো উপায় না থাকায় নদী বুকে জেগে ওঠা চরগুলো থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু সংগ্রহের চেষ্টায় তারা প্রশাসনিক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বলেন, ইতোপূর্বে নদী ভাঙ্গন কবলিত ২৮২ জনের নাম তালিকায় এসেছে। নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এসব পরিবারের বাড়ি ঘর নির্মাণে টিনের তালিকা উচ্চ পর্যায়ে চাহিদা প্রেরণ করা হবে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার পরিবারের মধ্যে প্রাণ হিসাবে বিশেষ (ভিজিএফ) জন প্রতি ১০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭