ঢাকাসোমবার , ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ খবর

আরইবিকে অচল করে দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়ে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন


সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪ ৫:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফরহাদ হোসাইন (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: অভিন্ন সার্ভিস কোড এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এসময় তারা নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে (আরইবি) অচল করে দেওয়া হুশিয়ারি দেন।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সমিতি প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেয়।

মানববন্ধনকারীরা জানায়, দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১৪ কোটি গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। যা সরাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রায় ৮০ শতাংশ। গ্রাহকদের সাথে সরাসরি কাজ করে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে সমিতি।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ ঘণ্টার বেশি সময় পর্যন্ত কাজ করে যেতে হয়। এরপরেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্তারা সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শোষণ, হয়রানি ও নিপীড়ন করে যাচ্ছে। সমিতির লোকজনের উপর কর্তৃত্ব করছে তারা।

ফলে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরইবির বলয় থেকে মুক্তি পেতে চায়। তা না হলে আরইবিকে অচল করে দেওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছে মানববন্ধনকারীরা।

তারা আরও জানায়, ২০১৩ সালের আইনে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একই আইনের অধীনে জনসেবক (একই প্রতিষ্ঠান) হলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সার্ভিস কোড সরকার কর্তৃক গেজেট আকারে পাশ করা হয়৷ কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সার্ভিস কোড পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক মনগড়া। যা কোন সরকারি-বেসরকারী সার্ভিস কোডের সাথে সামঞ্জস্য নয়। যেখানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর অসদাচারণ হলো ৪ টি, আর সমিতির অসদাচারণ ৩৬ টি। এটা চরম বৈষম্য বলে দাবি সমিতির লোকজন।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সরাসরি গ্রাহক সেবার সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও তারা কেন মালামাল ক্রয় করতে পারে না। আরইবি কর্তৃক মালামাল ক্রয় করে সমিতির গুলোতে সরবরাহ করা হয়। টাকা পরিশোধ করে সমিতি। কিন্তু মালামালগুলো একেবারে নিম্নমানের।

মিটার, তার, খুঁটি, পাওয়ার ট্রান্সফরমারসহ যাবতীয় নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করে আরইবি। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহে নানা ত্রুটি দেখা দেয়। গ্রাহক সেবা বিঘ্নিত হয়। ভোগান্তি হয় তাদের। এতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছে না গ্রাহকরা। সামান্য বাতাস বা বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। এছাড়া নিম্নমানের মালামালের কারণে দুর্ঘটনা অহরহ ঘটছে।

গত ৪৭ বছরে ৫৭১ জন লাইনম্যান নিহত হয়েছে, আহত ১৫০০ এর বেশি কর্মী। তারা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা কিংবা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না।

তারা জানায়, কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, পদায়ন এবং বদলি করতে পারে না সমিতি। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে আরইবি। এতে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য হয়।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সমিতি পরিদর্শন, অডিট, আভ্যন্তরীণ নীরিক্ষার নামে কর্মীদের হয়রানি এবং অবৈধ সুবিধা নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। তাদের মানষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন ডিজিএম স্টোক করে মৃত্যুবরণ করে।

মানববন্ধন কারীরা এীব অনিয়ম, দুর্নীতি হয়রানি বন্ধসহ নানা বৈষম্য থেকে বের হতে চায়।

সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানায়, তারা নানা দাবি জানিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরু হয়। পরে দফায় দফায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। এতে আংশিক দাবি পূরণে হলেও মূল দাবিগুলো উপেক্ষিত থাকে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সমিতির ডিজিএম (টেকনিশিয়ান) মো. তাজুল ইসলাম, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. পাবেল মিয়া, হিসাব রক্ষক মাসুম বিল্লাহ, লাইন টেকনিশিয়ান শরীফুল ইসলাম, লাইনম্যান (গ্রেড-২) সিহাব সম্রাট, পিসিএম সলিম উল্যা, মিহির চন্দ্র দে প্রমুখ।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।