ফরহাদ হোসাইন (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে লক্ষ্মীপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজীব কুমার সরকারকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেততন নাগরিক সমাজ।রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে লক্ষ্মীপুরের সর্বস্তরের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে আবদুল খালেক, ইদ্রিস, জহির ও লক্ষ্মীপুরের নাগরিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়ন কর্মীসহ বিভিন্ন সংস্থার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।বক্তারা বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি করা রাজীব কুমার সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাস ছিলেন। বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্নস্থানে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বিনাভোটের অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যাযজ্ঞে ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আওয়ামী সরকারের হয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রাজীব কুমার সরকার। যখন-যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, তখন সেখানেই গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ক্যাডার হিসেবে আওয়ামী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। অবিলম্বে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদ থেকে তাঁকে প্রত্যাহার করে গণহত্যায় সহযোগিতা করার অপরাধে শাস্তির জোর দাবি জানান তাঁরা।
বক্তারা আরও বলেন, ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি লক্ষ্মীপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার সরাসরি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শত-শত জীবনের বিনিময়ে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। অবিলম্বে লক্ষ্মীপুর থেকে রাজীব কুমার সরকারকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন লক্ষ্মীপুরবাসী। রাজীব কুমার সরকারের মতো কর্মকর্তাদের হাতে লক্ষ্মীপুর তথা বাংলাদেশ নিরাপদ নয় বলে দাবি করেন বক্তারা।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপ-সচিব সুফিয়া আক্তার রুমীকে। নিয়োগের একদিন পর তাঁর নিয়োগ বাতিল করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রাজীব কুমার সরকারকে লক্ষ্মীপুরের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর দুই দফায় ৫৯ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল সরকার। এই নিয়োগের পর বিগত আমলে ‘বঞ্চিত’ একদল কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে মঙ্গলবার হট্টগোল করেন। পরে আট জেলার ডিসি নিয়োগ বাতিল করে সরকার। তাঁর মধ্যে লক্ষ্মীপুরও ছিল।
এ ছাড়া চার জেলায় ডিসি পদে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের জেলা রদবদল করা হয়। এর মধ্যে যাকে নাটোরে দেওয়া হয়েছিল, তাকে লক্ষ্মীপুরে দেওয়া হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়। এর পর থেকে সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবর্তনে হাত দেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় জনপ্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষা ক্যাডারসহ বিভিন্ন চাকরিতে ব্যাপক রদবদল হচ্ছে।‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে লক্ষ্মীপুরের নবাগত ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবি।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭