আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার আশুলিয়ায় পৈতৃক ভিটাবাড়ী জবর-দখলের অভিযোগ উঠেছে গোকুলনগর স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ইয়াদ আলীর বিরুদ্ধে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ই আগস্ট সরকার পতন হওয়ার পরপরই ৬ আগস্ট কিছু সংখ্যক লোকজন নিয়ে বাড়িতে ভাংচুর করে দুটি ব্যানার টানিয়ে ও তালা ঝুলিয়ে দখল করেন ঐ শিক্ষক। তবে ঐ শিক্ষকের দাবি ৪ শতাংশ জমি দান দাতা উম্মে রোম্মান স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে দান করে দেন।
সোমবার দুপুরে এ ঘটনায় পিতৃ ভিটাবাড়ী ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলণ করেছেন ভুক্তভোগী ৮ বোন। এরআগে আশুলিয়া থানায় গত ১৫ই আগস্ট সাধারণ ডায়েরি ও ১৯ আগস্ট সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সুবিচার চেয়ে একটি আবেদন করেন ৭ নম্বর বোন উম্মে সালমা (৫০)।
সাধারন ডায়রীর সূত্রে জানা যায়, গত ৬ই আগস্ট ইয়াদ আলী গং, (৬৫) আশুলিয়া থানাধীন গকুলনগর মৌজা সেনওয়ালিয়া অবস্থিত যাহার দাগ নং-এস এ ৩৫ আর এস ১২৬ দাগের চালা জমি ৩০ শতাংশ ইহার কাথে ০৪ শতাংশ, আমার নিজ বসতভিটাটি তালাবদ্ধ থাকা অবস্থায়, বিবাদীদ্বয় তালা ভেঙ্গে ভিতরে থাকা জিনিস পত্র ভাংচুর করে পরবর্তীতে তালাবদ্ধ করে রেখে যায়। এবং প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এঘটনায় অসহায় উম্মে সালমা (৫০) উপরোক্ত বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য আশুলিয়া থানায় গত ১৫ই আগস্ট সাধারণ ডায়েরি করেন। যাহার (জিডি) নং ৩৯৪ তাং ১৫.০৮.২৪ইং।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ ২১ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী উম্মে সালমা (৫০) বলেন, আমার বাবা মো.বজলুর রহমান পাটোয়ারী
সাভার ডেইরি ফার্মে উচ্চ মান সহকারী হিসাবে চাকরি করতেন। সে অত্যন্ত সৎ ব্যক্তি ছিলেন, ১৯৯৫ সালে অবসরে এসে সাভারের সেনওয়ালিয়া গ্রামে ৪ শতাংশ জায়গা কিনে ১৯৯৭ সালে বাড়ি করেন। যেখানে আমরা নয় বোন একসাথে বসবাস করেছি আমাদের অনেক স্মৃতি এখানে জড়িত রয়েছে। ২০০৭ আগস্ট বাবা মারা যান, এবং আমার বাবা সকল বোনদের নামে সম্পত্তি লিখে দিয়ে গিয়েছিলেন। বোনদের বিয়ে হয়ে গেলে শুধু ৫ নম্বর বোন জোবেদা পারভিন (৫২) এই বাড়িতে স্বামী সন্তানসহ বসবাস করতেন। আমরা মাঝেমধ্যে সন্তান সহ আসতাম সন্তানদের নানা বাড়ির বাবার স্মৃতিটুকু দেখতাম। এখন আমাদের মনে একটাই দুঃখ যে এই স্মৃতিটুকু আমাদের কাছ থেকে জোর করে ছিনিয়ে নিচ্ছে একদল ভূমি দস্যু। আমরা এর বিচার চাই, সঠিকভাবে এর তদন্ত করে আমার বাবার শেষ স্মৃতি আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হোক।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়েছে, উক্ত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে, গত ৬ই আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১০টার সময় গকুলনগর স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃক দখলকৃত আশুলিয়া থানাধীন গকুলনগর মৌজা সেনওয়ালিয়ায় অবস্থিত যাহার দাগ নং-এস এ ৩৫ আর এস এ ১২৬ দাগের চালা জমি ৩০ শতাংশ ইহার কাথে ০৪ শতাংশ বসতভিটাটিকে অনতিবিলম্বে দখলমুক্ত করে, উক্ত ভূমি ও বাড়ির ওয়ারিশ এবং মালিক উম্মে সালমা গং কে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিজ বসতভিটায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবুল কালামের সাক্ষরিত পেডে আরও বলা হয়েছে, উপরোক্ত বিষয়বস্তু মোতাবেক কোন ভূমিদস্যু বা ভূমিলিন্স উম্মে সালমা গং এর ভূমি দখলের অপচেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইয়াদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।