ঢাকামঙ্গলবার , ২৭ আগস্ট ২০২৪
আজকের সর্বশেষ খবর

লক্ষ্মীপুরের ৯০ ভাগ এলাকা এখন পানির নিচে, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে বনভাসীরা


আগস্ট ২৭, ২০২৪ ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফরহাদ হোসাইন (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : কেবলই অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে লক্ষ্মীপুরের বন্যা পরিস্থিতি। গত কয়েকদিনের চেয়ে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত শনিবার, রোববার ও সোমবার আরও কম ছিল। ফলে চরম সংকট পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে জেলাজুড়ে। পানির উচ্চতা না কমলে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এতে কেউ পাচ্ছেনা বিশুদ্ধ পানি ও পরিমাণমত খাবার।এদিকে এলাকার পানিবন্দি লোকজন বাড়ীঘর রেখে ছুটে চলেছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। কোনো কোনো আশ্রয়কেন্দ্র পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯০ ভাগ এলাকাই এখন পানির নিচে। এতে ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪২০ জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর নোয়াখালী থেকে রহমতখালী খাল, ভুলুয়া খাল ও ওয়াপদা খাল হয়ে ব্যাপকভাবে পানি ঢুকতেও দেখা গেছে। এতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে। তবে পানিবন্দি অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতেও আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।জেলার বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুর্গম কিছু কিছু এলাকাগুলোতে পানিবন্দিদের জন্য কোনো খাবার যাচ্ছে না। এজন্য ফেসবুকসহ নানাভাবে ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে মানুষ। দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে পর্যাপ্ত নৌকার প্রয়োজন।লক্ষ্মীপুরে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারী, চরশাহী, দিঘলী, উত্তর জয়পুর, দত্তপাড়া, তেওয়ারীগঞ্জ, বাঙ্গাখাঁ, লাহারকান্দি, ভবানীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের রহমতখালী খাল সংলগ্ন লামচরী, মজুপুর এলাকা, সমসেরাবাদ, চররুহিতা, বাঞ্চানগর, মধ্য বাঞ্চানগর, পার্বতীনগর, কমলনগরের চরকাদিরা, তোরাবগঞ্জ, রামগতির চরবাদাম, রামগঞ্জের লামচর, চরপোড়াগাছা, কাঞ্চনপুর, ভাটরা, ভোলাকোট, চন্ডিপুর, রামগঞ্জ পৌরসভা, ভাদুর, করপাড়া, দরবেশপুর, রায়পুরের কেরোয়া, চরপাতা, বামনি, রায়পুর, দক্ষিণ চর-আবাবিল সোনাপুর, চরমোহনা, ইউনিয়ন ও রায়পুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা বন্যায় কবলিত। এর মধ্যে দিঘলী, চরশাহীসহ দুর্গম এলাকাগুলোতে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। সেসব এলাকার মানুষ খাদ্যসংকটে হাহাকার করছেন। যে যেভাবে পারছেন ত্রাণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত নৌকা না থাকায় উদ্ধারকারী ও ত্রাণ সহায়তাকারীরা দুর্গম এলাকাগুলোতে যেতে পারছেন না বলে জানা গেছে।এদিকে সরকারি এবং রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি উদ্যোগে শহরের আশপাশে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছায়নি জানিয়েছে পানিবন্দি বাসিন্দারা।লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বন্যার পানি ৮ ইঞ্চি বৃদ্ধি পেয়েছে। রহমতখালী খাল হয়ে নোয়াখালীর পানি লক্ষ্মীপুরে অনবরত ঢুকছে।অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান দৈনিক ভোরের খবরকে বলেন, জেলায় বর্তমানে ৭ লাখ ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ২৩ হাজার ৪০৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৯৪৩ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি রান্না করে পরিবেশন করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক দুর্গম এলাকায় যারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি, তাদের জন্য শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জেলার সর্বত্র ত্রাণ বিতরণ করছেন।

✅ আমাদের প্রকাশিত কোন সংবাদের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ  বা পরামর্শ থাকলে ই-মেইল করুনঃ dailyvorerkhabor@gmail.com ❌ বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।