জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর : নানান অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ এনে লক্ষ্মীপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নির্মল ইন্দু সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন ৩৭জন শিক্ষক। বুধবার (২১আগষ্ট) সকালে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা ও অপসারণের দাবিতে ক্লাশ বর্জন করেন। ক্লাশ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও অধ্যক্ষের অপসারণ দাবী জানান। এদিকে অভিভাবকরা এই ঘটনায় ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে এভাবে ক্লাস বর্জন করতে পারেন না। এই ঘটনায় তাৎক্ষনিক জেলা প্রশাসক শিক্ষকদেরকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।
কলেজের প্রভাষক আমির হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক বরাবর অধ্যক্ষের অপসারণের দাবীতে শিক্ষকরা লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
অভিযোগ রয়েছে, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নির্মল ইন্দু সরকার চলতি বছর ২৪শে ফেব্রুয়ারী অত্র প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। এরপর থেকে ভূয়া বিল ভাউচার করে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাত করে আসছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষকদের চাকুরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ, প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা, ধর্মীয় সম্প্রতি বিনষ্ট সহ নানান অনিয়ম করে আসছেন তিনি।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে যোগদানের কয়েকদিনের মাথা অর্থের বিনিময়ে তিনি সদর উপজেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
নাম প্রকাশ না শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, কয়েকদিন থেকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবীতে শিক্ষক ক্লাশ বর্জন রেখেছেন। প্রতিদিন এসেও ক্লাশ না হওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে বাড়তে। আমরা দ্রুত পাঠদান স্বচলের দাবী জানাই।
কলেজ শিক্ষক আজাদ উদ্দিন, সঞ্জিত কুমার রায়, আমির হোসেন, আবদুস সাত্তার শামীমসহ অনেকে বলেন, আমাদের অধিকাংশ শিক্ষকই চান অধ্যক্ষ পদত্যাগ করুক। তিনি এ প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকে নানান দুর্নীতি-অনিয়ম করে আসছেন। আগে ঠিকমত বেতন দেওয়া হলেও এখন আর প্রতিষ্ঠান থেকে সময়মত তাদেরকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া বিভিন্ন সামগ্রী ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্রয়ে রয়েছে নানা অনিয়ম। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির কর্ণদার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা হওয়ায় ইতিপূর্বে এই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়মের তদন্ত হয়নি। অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ নির্মল ইন্দু সরকার বলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা আমাকে শুরু থেকেই মেনে নিতে পারেন নি। তিনি যোগদানের তিন মাস পরেই জেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন। বিষয়টি তিনি তার ব্যক্তিগত ফেইসবুকে দিলেও শিক্ষকরাসহ অভিভাবকরা সমালোচনার ঝড় তুলেন। আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি জড়িত নয়।
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, শ্রেষ্ঠ কলেজ অধ্যক্ষ বাছাই কমিটিতে কে ছিলেন আমি জানিনা। এছাড়া তিনি আরো বলেন, কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছি। আগামীকাল থেকে ক্লাশ নিয়মিত চলবে।