মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রশাসনের বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষিত খালে বাল্কহেড চালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির দখল নিতে বাল্কহেড মালিক ও সুকানিদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে।রবিবার (২৫ আগষ্ট ) গভীর রাত দুইটার দিকে মুন্সীগঞ্জের তালতলা ডহরি খাল দিয়ে বালু ভর্তি বাল্কহেড বালু নিয়ে ঢাকার দিকে যাওয়ার সময় চাঁদাবাজির দখল নিতে একাধিক বাল্কহেড চালক ও মালিকেকে মারধর করেছে চাঁদাবাজরা।জানাগেছে, ২০২৩ সালের ৫ই আগস্ট ওই খালে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি টলার ডুবে ১০জন নারী ও শিশু মারা গেলে ওইখালে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন।কিন্তু বাল্কহেড চালকদের কাজ হতে চাঁদা নিয়ে একটি মহল দীর্ঘদিন যাবত প্রশাসনের নিষিদ্ধ ঘোষিত খালে বাল্কহেড চলাচলে সহায়তা করে আসছিল। এরমধ্যে লৌহজং উপজেলার শামুরবাড়ি গ্রামের একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত এই চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু সরকারের পালাবদলের কারণে এই চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট হাতে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি গ্রুপ। বাল্কহেড চালকরা আগের সিন্ডিকেটকে টাকা দিয়ে ওই নিষিদ্ধ ঘোষিত খালে বাল্কহেড চালালে বর্তমান সিন্ডিকেটটি এই চাঁদার দখল নিতে ওই খালে চলাচলরত বাল্কহেড মালিক ও শ্রমিকদের মারধর চালিয়ে যাচ্ছে।এ ব্যাপারে একটি বাল্কহেডের সুকানি সাদ্দাম বলেন, আমি রবিবার রাত দুইটার দিকে ওই খাল দিয়ে বালুভর্তি বাল্কহেড নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলাম। আমি টঙ্গীবাড়ি উপজেলার নুরপুর মাদ্রাসার সামনে আসলে ৩০ হতে ৪০ জন আমার উপর হামলা চালায়। আমি কাকে টাকা দিয়ে ওইখালে বাল্কহেড চালাই তা জানতে চায় । পরে তারা আমাকে মারধর করে আমার কাছ হতে দুই হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।বাল্কহেড মালিক ইমরান বলেন, আমার বাড়ি বরিশাল জেলায়। গভীর রাতে আমি ওই খাল দিয়ে বাল্কহেড নিয়ে আসার সময় আমার উপরে দুইবার হামলা হয়। ওই এলাকার লোকজন লাঠি সোটা নিয়ে আমার ও আমার ট্রলারের শ্রমিকদের মারধর করে।পরে আমি তাদের ১০০০ টাকা দিলে তারা চলে যায় আর বলে যায় এইখালে ট্রলার চালাতে হলে তাদের চাঁদা দিয়ে চালাতে হবে।এদিকে গতকাল সোমবার সকালে , বাল্কহেডে চাঁদা তোলা নিয়ে সামুরবাড়ির নিরিহ মানুষের উপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ওই এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে।ওইখালে চলাচলরত বাল্কহেড হতে বালি নেওয়া একাধিক ড্রেজার চালকের সাথে কথা বলে জানাযায়, দীর্ঘদিন যাবত এইখালে বাল্কহেড চালকদের কাজ হতে চাঁদাবাজি হয়ে আসছে। আগে লৌহজং উপজেলার সামুরবাড়ি এলাকার একটি গ্রুপ চাঁদাবাজি করলেও এখন সরকারের পালাবদলের সাথে সাথে ডহরি গ্রামের লিটু ,বুলবুল শেখ, শুভ শেখ, পাবেল, ভুলু, সজিব, মাসুম, বাবু, আলামিন, শাকিল গংরা ওই চাঁদাবাজির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাল্কহেড চালকরা চাঁদা না দিলে তারা চালকদের মারধর করছে।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লিটু বলেন, এটি আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ। আমরা কাউকেই মারধর করি নাই চাঁদা ও চাইনাই। আমাদের গ্রামবাসী ওই খালে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আর বন্ধ করে দেওয়ার জন্যই আমরা খালে অভিযান চালাইছি।এ ব্যাপারে অপর অভিযুক্ত পাভেল বলেন, আমি ঢাকায় আছি আমি বাল্কহেডে কোন চাঁদাবাজি করি নাই।এ ব্যাপারে ডহরি গ্রামের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল বলেন, আমাদের এখানে বাড়িঘর ভেঙে যায় বিধায় আমরা বাল্কহেড যেতে না করছি । আমরা কেউ চাঁদা তুলি নাই । হালিম নামের এক লোক বাড়ি নুরপুর উনি টাকা তুলতে পারে । উনি ওই বাল্কহেট চালকদের মারধর করেছে বলে আমি শুনেছি।এ ব্যাপারে লৌহজং থানা ইনচার্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই ফখরুল হাসান ফারুক বলেন, এই ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এ্যাড. নজরুল ইসলাম । ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক ভোরের খবর,খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান। অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। বার্তাকক্ষ-+৮৮০১৭৪৫-৩৫৪২৭৭