মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:মুন্সীগঞ্জের ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু ( মুক্তারপুর সেতু) টোল কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি উঠেছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে গেল বেশ কয়েকদিন ধরে জেলায় এ নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের মানুষ।শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের মানুষেরা বলছে, মুক্তারপুর সেতুতে পণ্যবাহী যানের তুলনায় যাত্রীবাহী পরিবহন বাস,সিএনজি,মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চলাচল বেশি। টোল বৃদ্ধির অযুহাতে এসব যানের কতৃপক্ষ-চালক যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করেন। যাত্রীবাহী যানবাহন গুলোর টোল কমিয়ে আনলে সাধারণ যাত্রী, শিক্ষার্থীরা এর সুবিধা পাবেন।সেতুটি ৩৭ টি স্প্যানের উপর দাড়ানো ১৫২১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্তে দুই লেনে নির্মিত। সেতুটি মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের সাথে মুক্তারপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জ -ঢাকার যোগাযোগ সহজ করেছে। কিন্তু এর টোল হার নিয়ে আপত্তি উঠেছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে।জানা গেছে, মুক্তারপুর সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে বিগত ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সে হিসাবে ১৬ বছর ধরে টোল আদায় হচ্ছে সেতুতে। সর্বশেষ সেতুর টোল বৃদ্ধি করা হয় গত ২০২১ সালের নভেম্বরে।সূত্র অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ৫ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকা ও বছরে গড়ে ১০ কোটি টাকা টোল আদায় হয়েছে এ সেতুটি থেকে।তবে এর আগের ১৪ বছরের টোল আদায়ের হিসাব সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা যায়, বিগত বছরগুলোতে সমপরিমাণ টোল আদায় হয়েছে। সবমিলিয়ে ১৬ বছরে গড়ে ১০ কোটি করে হিসাব করলে টোল আদায় হয়েছে ১৬০ কোটি টাকার কম-বেশি আনুমানিক।সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটি ২০৮.৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মুন্সীগঞ্জের শহরে উপকন্ঠ মুক্তারপুর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর উপর চায়না রোড এন্ড ব্রীজ কর্পোরেশন (সিআরবিসি) ২০০৫ সালের জুলাইতে নির্মাণ কাজ শুরু করে। শেষ হয় ২০০৮ সালের জানুয়ারীতে আর উদ্বোধন হয় একই বছর ফেব্রুয়ারিতে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ব্যায় ছিলো ৭৯.১৫ কোটি টাকা আর বাকি ১২৯.২০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে সাহায্য করে চীন।বর্তমানে সেতুটিতে ভ্যান বা মোটর সাইকেলের জন্য টোল নেয়া হয় ১৫ টাকা, সিএনজির জন্য ৩০ টাকা। বিগত সময়ে ছিলো যথাক্রমে ১০ ও ২০ টাকা। প্রাইভেট কার-টেম্পো, জীপ-মাইক্রো, পিকআপের জন্য টোল নেয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের আগে নেওয়া হতো ৪০ টাকা। ছোট ও বড় বাসের টোল ৫০ টাকা করে বাড়িয়ে যথাক্রমে ১৫০ ও ২৫০ টাকা করা নেয়া হচ্ছে। ট্রাকের টোল বাড়ানো হয়েছে আগের চেয়ে ৫০ টাকা করে। আগে বড় ট্রাক বা ট্রেইলরের জন্য আলাদা টোল হার না থাকলেও নতুন করে তা যুক্ত হয়েছে। এগুলোর শ্রেণি ভেদে টোলের হার ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী মুক্তারপুর সেতু সাইড অফিস মো. মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বরাবর শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। সেতু কর্তৃপক্ষ যে, নির্দেশনা দিবে তা বাস্তবায়ন করবো।